সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে করা মামলায় স্বামী কার্তিক চন্দ্র ঘোষের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলায় অভিযুক্ত পাঁচজন খালাস পেয়েছেন।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আজম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কার্তিক কুমার পাটকেলঘাটার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের তেজেন্দ্র নাথ ঘোষের ছেলে।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- কার্তিক কুমারের বোন চায়না ঘোষ ওরফে মনু, মা জুথিকা রানী ঘোষ, চাচাতো ভাই সুভাষ ওরফে পচা, বোনাই জয়দেব ঘোষ ওরফে খোকা ও বোন সুন্দরী ঘোষ ওরফে খুকু।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০১ সালে খুলনার দোলখোলা গ্রামের গোসাই চন্দ্র ঘোষের মেয়ে শিপ্রা ঘোষের সঙ্গে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের তেজেন্দ্র নাথ ঘোষের ছেলে কার্তিক কুমার ঘোষের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে কার্তিক কুমার তার পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী শিপ্রাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। এরই মধ্যে তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। শিপ্রা সংসার ও সন্তানের দিকে তাকিয়ে সব নির্যাতন সহ্য করলেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। একপর্যায়ে ২০১০ সালের ২৩ মে রাতে কার্তিক কুমার ও তার পরিবারের সদস্যরা শিপ্রাকে বেদম মারধর করে হত্যা করে। ওইদিন দিনগত রাত ৩টার দিকে তাদের (শিপ্রার মা-বাবা) মোবাইলে শিপ্রার মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে তারা (শিপ্রার মা-বাবা) গিয়ে শিপ্রার জখম মরদেহ দেখতে পান। এ ঘটনায় শিপ্রার মা নমিতা রাণী ঘোষ বাদী হয়ে পাটকেলঘাটা থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ১ নম্বর আসামি কার্তিক কুমার ঘোষের নামে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন আদালত। এছাড়া অন্য আসামিরা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
এসআরএস