ঢাকা, রবিবার, ১৬ ভাদ্র ১৪৩১, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৬ সফর ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল নিয়মতান্ত্রিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল নিয়মতান্ত্রিক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক | ফাইল ছবি

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর প্রত্যেকটি রাজনৈতিক পদক্ষেপই ছিল নিয়মতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। তার ১৯৬৬ সালে ছয় দফা ঘোষণা এবং ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল নিশ্ছিদ্র আইনি কাঠামোর ভেতরে।

শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস’ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবভন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন দেশে ফেরার পর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেগুলিও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করেই গ্রহণ করা হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান কার্যকর করার পর বঙ্গবন্ধু যেসব পদক্ষেপ নেন তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য পদক্ষেপ ছিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠা। এর ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর আইনের শাসনের প্রতি ছিল গভীর আস্থা, ছিল পরম শ্রদ্ধা। আর একটি নতুন রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিল তার নিখুঁত ও দূরদর্শী পরিকল্পনা। সে কারণেই তিনি একজন রাষ্ট্রনায়ক। বঙ্গবন্ধুর ছিল নিয়মতান্ত্রিকভাবে সোনার বাংলা গড়ার পরিষ্কার দর্শন এবং তিনি সেভাবেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠিত করে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য বাঙালি জাতির, একাত্তরের পরাজিত শক্তি সেই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরের অধ্যায় ছিল সামরিক শাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা, রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং নির্বিচারে সংবিধান লঙ্ঘন। এই অধ্যায়ে মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়া তো দূরের কথা, বিচার পাওয়ার পথই রুদ্ধ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর একটি মামলা পর্যন্ত রুজু করা হয়নি বরং খুনিদের যাতে বিচার করা না যায় সেজন্য ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স নামে একটি কালো আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেই আইন ২১ বছর এই দেশে বলবৎ ছিল।

সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাস তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ১৯৭২ সালে হাইকোর্ট বিভাগে ১০ জন এবং আপিল বিভাগে ৩ জন বিচারক নিয়ে সীমিত পরিসরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এক মহীরুহে পরিণত হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে রাষ্ট্রের এ বিশাল অঙ্গের কাজের পরিধি ও বৈচিত্র্য যেমন বেড়েছে, তেমনি জনবল ও এজলাসের সংখ্যা বেড়েছে। বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতা বেড়েছে। ফলে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের ৯৫ জন বিচারপতি নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ এম আমিন উদ্দিন এবং বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্ট দিবস উদযাপন সংক্রান্ত জাজেস কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ওইদিন সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘ফুলকোর্ট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রথম যেদিন উচ্চ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল (১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর), সেদিন অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।