ঢাকা: মুদ্রা পাচার মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডিত ম্যাক্সিম ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একজন পরিচালককে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
বুধবার (১৫ জুন) বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের তাদের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী জানান, বিচারিক আদালতের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির এমডি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পরিচালক আমিরুল ইসলাম হাইকোর্টে জামিন চেয়েছেন। আজ আদালত তাদের জামিন না দিয়ে আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মফিজুল হকসহ ২১ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন—ম্যাক্সিম ফাইন্যান্সের এমডি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পরিচালক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, খায়রুল বাশার সজল, আবদুল হান্নান সরকার, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম, এইচএম আমিরুল ইসলাম, মো. ওলিয়ার রহমান, ফজলুর রহমান, মো. আসাদুজ্জামান (তপন), মোহাম্মদ সোলাইমান সরোয়ার, হারুন আর রশিদ, শেখ আবদুল্লাহ আল মেহেদী, সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন, এমএ সাদী, আসলাম হোসাইন, মেহেদী হাসান মোজাফ্ফর, ইমতিয়াজ হোসেন কাওসার ও মিজানুর রহমান।
আসামিদের প্রত্যেককে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনশ কোটি ৯৩ লাখ ১২ হাজার ৭৩৯ টাকার দিগুণ জরিমানা করেন। পরে দণ্ডিতরা হাইকোর্টে আপিল করেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, এমএলএম ব্যবসার নামে অতি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৩০৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ম্যাক্সিম ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মফিজুল হকসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক নূর হোসেন খান ২০১৪ সালের ১৯ মে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
বিচারিক আদালতে রায়ের দিন দুদকের আইনজীবী এমএ হাসান জানিয়েছিলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে ম্যাক্সিম ফাইন্যান্সের ১১৩টি শাখার মাধ্যমে ১৮ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় ৩০৪ কোটি ১০ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এই টাকা ম্যাক্সিম গ্রুপভুক্ত অন্য প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ দেখিয়ে স্থানান্তর, রূপান্তর করে মানি লন্ডারিং করা হয়, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গ্রাহকের আমানতের বিপরীতে প্রতি লাখে মাসে দুই হাজার টাকা ও আদায়কারীকে মাসে ৫শ’ টাকা করে কমিশন দেওয়া হয়। ব্যবসা করে ওই হারে মুনাফা দেওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নতুন গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ পুরনো গ্রাহককে দেওয়া হতো। ম্যাক্সিম ফাইন্যান্স থেকে সংগ্রহ করা অর্থ বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হতো। ম্যাক্সিম ফাইন্যান্সের ১১৩টি শাখা থাকলেও সমবায় অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নেওয়া হয় ২৫টি শাখার। বাকি ৯৮টি শাখার অনুমোদন ছিল না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২২
ইএস/এমজেএফ