পিরোজপুর: পিরোজপুরে পরকীয়ায় বাঁধা দেওয়ায় মো. মইনুল (১১) নামের এক শিশুকে হত্যার দায়ে শওকত আলী খান (৫২) নামে একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম নুরুল ইসলাম আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত শওকত আলী খান পিরোজপুর সদর উপজেলার ভোরা গ্রামের মৃত আশ্রাব আলী খানের ছেলে।
আদালত ও দায়ের হওয়া এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর সদর উপজেলার পোরগোলা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী রফিকুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী মমতাজ বেগমের সঙ্গে পিরোজপুর সদর উপজেলার ভোরা গ্রামের আসামি শওকত আলী খানের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। তাদের এই সম্পর্কের কথা মমতাজ বেগমের ছেলে মো. মইনুল জানতে পেরে শওকত আলী খানকে প্রকাশ্যে ও গোপনে তার মায়ের সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করে। এ ঘটনায় মইনুল তার মাকে নিয়ে পিরোজপুরের পালপাড়া এলাকার বাসায় থাকা শুরু করে। মইনুল বাগেরহাট মাদরাসায় আবাসিকে থেকে পড়াশোনা করত।
২০০৩ সালের ২৩ মার্চ মইনুল তার মাকে জানায় সে তার নানা বাড়ি ভৈরমপুর যাবে কিন্তু মইনুল তা না করে তার নিজ বাড়ি পিরোজপুর সদর উপজেলার পোরগোলা গ্রামে যায়। ওই দিন রাতে কোনো এক সময় শওকত আলী খান মইনুলকে শ্বাসরোধ করে খুন করে পোরগোলা গ্রামের বাধ মারার চরে ফেলে রাখে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করলে মইনুলের দাদী রোকেয়া খাতুন বাদী হয়ে ২০০৩ সালের ২৭ মার্চ পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো হাবিবুর রহমান মামলার তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ২৮ মে আসামি শওকত আলী খানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
সরকার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী সরকারি আইনজীবী (এপিপি) জহিরুল ইসলাম। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট দেলওয়ার হোসেন।
সরকার পক্ষের সহকারী সরকারি আইনজীবী (এপিপি) জহিরুল ইসলাম বলেন, ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
আরএ