ঢাকা: সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২২ জুন) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
গত ১৫ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র মো. তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ না করে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৭০১ টাকা পানির বিল মওকুফসহ বিল যথাযথভাবে আদায় না করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র এককভাবে মওকুফ করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
১৪২৩-১৪২৮ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত ৬ বছরে পৌরসভার হাট-বাজার ইজারা বাবদ ৬৬ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫১ টাকা বকেয়া রয়েছে। এছাড়া ভ্যাট, আয়কর বাবদ ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ৯৭০ টাকা আদায় ও সরকারি খাতে জমা করা হয়নি এবং উক্ত সময়ের ইজারা লব্ধ অর্থ হাট-বাজার ইজারা নীতিমালা-২০১১ অনুযায়ী বণ্টন না করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
বিদ্যমান বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ না করে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে তদন্তকালীন পর্যন্ত মোট এক কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ৯৪৩ টাকার পৌরকর মওকুফ করা হয়েছে। ওই পৌরকর যথাযথভাবে আদায় না করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র কর্তৃক এককভাবে মওকুফ করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
বিদ্যমান নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে অনুসরণ না করে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৭২৬ টাকা ট্রেড লাইসেন্স ফি মওকুফ করা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স ফি যথাযথভাবে আদায় না করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়র এককভাবে মওকুফ করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩১(১) মোতাবেক, যেক্ষেত্রে কোনো পৌরসভার মেয়র অথবা কোনো কাউন্সিলর অপসারণের কার্যক্রম আরম্ভ করা হয়েছে অথবা তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হয়েছে, সেই ক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় মেয়র অথবা কাউন্সিলর কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পৌরসভার স্বার্থের পরিপন্থি অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হলে সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে মেয়র অথবা কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবে।
তাই সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মধ্যে উল্লিখিত অভিযোগসমূহ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩২ এর উপ-ধারা (১)(ঘ) মোতাবেক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে একই আইনের ধারা ৩১(১) অনুযায়ী মেয়রের পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
কোটি টাকা নয়-ছয়: সাতক্ষীরার মেয়র বরখাস্ত
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২২
ইএস/এসআইএস