ঢাকা: ১৮ জুন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধক্ষ্যকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনার বিচারিক তদন্ত চেয়ে রিট করেছে আইন ও সালিস কেন্দ্র।
রিটে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস ও তার পরিবারের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের আবেদন করা হয়েছে।
বুধবার (৬ জুলাই) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।
এর আগে সোমবার করা এ রিট গতকাল মঙ্গলবার দাখিল করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় এখন পর্যন্ত (৪ জুলাই সোমবার) মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ১৮ জুন নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে রাহুল দেব নামে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র নুপুর দেবকে সমর্থন করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র তৈরি হয়। শিক্ষক স্বপন কুমার ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে এ সময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। তাদের দাবির পরিপ্রক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসসহ অভিযুক্ত ছাত্রকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
এর পর থেকে বাড়ি না ফিরে নিজেকে আড়াল করেছেন অধ্যক্ষ স্বপন কুমার। আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না পরিবারের লোকেরা।
এদিকে ঘটনার ১০ দিন পরে সোমবার (২৭ জুন) বিকেলে সদর থানা পুলিশ বাদী হয়ে সহিংসতার ঘটনায় অজ্ঞাত ১৭০ থেকে ১৮০ জনের নামে মামলা করেছে।
স্বপনের স্ত্রী সোনালী দাস প্রায় বাকরুদ্ধ। তিনি কান্না জড়ানো কণ্ঠে ২৮ জুন বাংলানিউজকে বলেছিলেন, কী দোষে স্বপনকে এভাবে অপমান করা হলো? সেদিন থেকে তিনি বাড়িতে নেই। কোথায় আছেন, কী করছেন তার কিছুই আমরা জানি না। এদিকে আমরাও নিরাপদে নেই। কেমন যেন এক অজানা আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
স্বপনের মেয়ে জুই বিশ্বাস এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। কিন্তু ভয়ে যেতে পারছেন না স্কুলে-প্রাইভেটে। তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে আমার পরীক্ষার কী হবে বলেই কেঁদে ফেলেন তিনি। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া আরেক মেয়ে ঘর থেকেই বের হচ্ছে না।
অধ্যক্ষের বাবা সুমন্ত বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ভরসা না দিলে কিভাবে সাহস পাবো? পুলিশ পাহারায় থাকার পরেও তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আবারও কিছু ঘটবে না তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২২
ইএস/আরএ