লক্ষ্মীপুর: নেশার করার জন্য ১০ টাকা না দেওয়ায় মা শেফালী বেগমকে (৬০) দা’ দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায়ে মাদকাসক্ত ছেলে মো. জাফরকে (২৭) আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
এসময় আদালতে আসামি জাফর উপস্থিত ছিলেন। জাফর রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালীয়া গ্রামের হোসেন আলী কবিরাজের ছেলে।
লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জাফর বেকার ছিলেন। তিনি প্রতিনিয়ত মাদকসেবন করতেন। মাদকের জন্য বিভিন্ন সময়ে জাফর তার মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতেন।
২০২০ সালের ২৮ আগস্ট সকালে নিজেদের বসতঘরে জাফর মাদক সেবনের জন্য তার মা শেফালী বেগমের কাছে ১০ টাকা চান। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে জাফর ধারালো দা দিয়ে তার মাকে কোপালে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর রাতেই ছেলেকে একমাত্র আসামি করে রায়পুর থানায় মামলা করেন জাফরের বাবা হোসেন আলী। ঘটনার পরদিন আসামি জাফরকে একই এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়পুর থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহ তদন্ত শেষে একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে জাফরকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সোমবার এ রায় দিলেন আদালত।
জাফরের আইনজীবী হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জাফরের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত আমাকে জাফরের আইনজীবী নিয়োগ করেন। জাফর সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গু হওয়ার পর বেকার হয়ে মাদকসেবনে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তিনি পুরোপুরি মাদকাসক্ত এবং মানসিকভাবে বিকারগস্ত হয়ে যান। এজন্য তিনি তার মাকে হত্যা করেছেন। সুস্থ মস্তিষ্কে তিনি হত্যাকাণ্ডটি ঘটাননি। তদন্ত কর্মকর্তা অধিকতর তদন্ত করলে তার সাজা আরও কমত। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২২
এসআই