ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

দাঁতের সুস্থতার জন্য...

তানিয়া আফরিন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১০
দাঁতের সুস্থতার জন্য...

বাংলা প্রবাদে প্রায়শ বলা হয়, দাঁত থাকতে আমরা দাঁতের মর্যাদা বুঝি না। কথাটা বিশেষ করে সত্য আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে।

আমরা দাঁতের প্রতি খুব উদাসীন থাকি।

দাঁতের সমস্যা আমাদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুন্দর হাসি, পরিষ্কার দাঁত এবং গন্ধহীন মুখ কর্মক্ষেত্রসহ জীবনের সব ক্ষেত্রে আপনাকে রাখবে সতেজ, প্রফুল্ল এবং কর্মোদ্দীপ্ত।
তাই দৈনন্দিন কার্যতালিকায় দাঁতের জন্য সামান্য সময় বরাদ্দ করে, একটু যতœ আপনাকে অনেক দিক থেকেই সুরক্ষা দেবে।

দাঁতের সুরক্ষার সহজ কিছু টিপস

*   দিনের শুরুতে খুব ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
   দিনে অন্তত দুই বার ব্রাশ করুন ফুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে।
  দাঁতের ফাঁকের খাদ্যকণা দূর করার জন্য সুতা ব্যবহার করুন দিনে অন্তত একবার।
*    ধুমপান অথবা তামাক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
যে কোনও ওষুধ খাওয়ার আগে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করুন এই ওষুধের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা। (কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে মুখ শুষ্ক হয়ে যায়)।
*  প্রতিনিয়ত দেখুন মুখের ভেতরে কোনও পীড়াদায়ক ফুসকুুড়ি আছে কিনা, দাঁতের মাড়িতে কোনও ক্ষত আছে কিনা কিংবা কোনও ধরনের পরিবর্তন আছে কিনা।
  বছরে অন্তত একবার ডেন্টিস্টের কাছে দাঁত পরীক্ষা করাবেন।

এগুলে তো হলো প্রাথমিক দেখভাল। তবে শুধু দাঁত ব্রাশ এবং নিয়মিত মুখ ধোয়া দাঁত সুরক্ষিত রাখতে যথেষ্ট নয়। আপনি কী খাচ্ছেন, কী পান করছেন তার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। শ্বেতসার এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার দাঁতের ক্ষয় বৃদ্ধি করে। তবে অধিক সবজি খেলে দাঁত ভালো থাকে।

দাঁতের পুষ্টিবিষয়ক টিপস

*    চিনিজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। বিশেষ করে আইসক্রিম, হলুয়া, জ্যাম-জেলিসহ অন্যান্য মিষ্টি।
  চিনি ছাড়া অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে যেমন দুধ, ভাত, মাংস, ফল এবং মাছ প্রভৃতি।
*    যে কোনও ধরনের পানীয় পরিহার করা উচিত।

এছাড়া খাদ্যতালিকায় নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন:

১.    তরলজাতীয় খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়।
২.    শক্ত খাবার বেশি করে চিবোনের কারণে লালাগ্রন্থি থেকে লালা নিঃসৃত হয়। ফলে তা নিজে নিজেই দাঁত পরিষ্কার করে ফেলে।
৩.    নরম এবং আঠালো খাবার পরিহার করতে হবে। কারণ এই খাবার দাঁতের সাথে লেগে থাকে, সহজে পরিষ্কার হয় না। ফলে ব্যাকটেরিয়া খুব দ্রুত আক্রমণ করে।


দাঁতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ও সমাধান

১.    নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ: এ সমস্যা প্রায়শ দেখা যেতে পারে। তবে বেশিদিন থাকলে ডাক্তার দেখাতে হবে। মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে এমনটি হতে পারে। দিনে দু বার ব্রাশ, দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা পরিষ্কার এবং জিহ্বা পরিষ্কার করলে দাঁত দুর্গন্ধময় হবে না।

২.    দাঁতের ক্ষয়: দাঁতের ক্ষয় খুব নিয়মিত একটা সমস্যা। মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়াগুলো প্রোটিনের সাথে মিলে থুথু বা লালার মাধ্যমে দাঁতের ওপরের অংশের ক্ষয়সাধন করে। এই ব্যাকটেরিয়া চিনি ও শর্করার সাথে বিক্রিয়া করে এসিড তৈরি করে, যা নিয়মিতভাবে দাঁতের ক্ষয় বাড়ায়।

৩.    দাঁতের মাড়িতে রোগ: দাঁতের গোড়ায় মাংসপেশিতে এই রোগ সাধারণত হয়ে থাকে। সাদা সাদা নরমজাতীয় অংশ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে দাঁতের গোড়া থেকে। ব্যাকটেরিয়া এখানেও আক্রমণ করে।

৪.    দাঁতের যন্ত্রণা: মুখের বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের ব্যাথা হতে পারে। গালের মধ্যে, দাঁতের গোড়ায়, জিহ্বা, ঠোঁট অথবা তালুতে পর্যন্ত ব্যাথা হতে পারে। সাধারণত ১০ থেকে ১৪ দিন এমনকি ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এই ব্যাথা থাকতে পারে। নিয়মিত গার্গল করলে ব্যাথা কমে যাবে। তবে মদজাতীয় পানীয়, ভাজা ও লবণাক্ত খাবার, টকজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

তবে এসব সমস্যা খুব দ্রুত ঠিক হতে পারে যদি আপনি নিয়মিত আগের টিপসগুলো মেনে চলেন এবং যথাসময়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।

বিদেশি পত্রপত্রিকা অবলম্বনে

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১৪৫, অক্টোবর ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।