রান্না করতে গিয়ে একবারও আগুনের ছ্যাঁকা লাগেনি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ছোটখাটো পোড়া যেমন-ছ্যাঁকা লাগা, ফোসকা হওয়া কিংবা চামড়া ছিলে গেলে এসবের চিকিৎসা আপনি বাড়িতেই সেরে ফেলতে পারেন।
সেজন্য কয়েকটি উপায় জেনে নিন-
ল্যাভেন্ডার অয়েল: ল্যাভেন্ডার জীবাণুনাশক হিসেবে চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি প্রদাহ কমাতে ও ব্যথা উপশমে কাজ করে।
২-৩ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল তুলায় নিন। এবার পোড়া অংশের চারপাশে ভালোভাবে মাখুন। ভালো ফল পেতে দিনে তিনবার এভাবে লাগান।
মধু: প্রাকৃতিক এ অ্যান্টিবায়োটিকে পিএইচ রয়েছে, যা পুড়ে যাওয়া ক্ষততে সংক্রমণ হতে দেয় না। এটি জ্বালাপোড়া কমায় ও এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দ্রুত ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
২ চা চামচ মধু নিন। আক্রান্ত স্থানে মেখে রাখুন। ফল পেতে দিনে তিন বার ব্যবহার করুন।
টুথপেস্ট: টুথপেস্ট এ মিন্ট থাকায় এটি পোড়া অংশের ব্যথা কমায় ও ক্ষত মসৃণ করতে সাহায্য করে।
মিন্টযুক্ত সাদা টুথপেস্ট নিন। ক্ষত স্থানটি ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে এর চারপাশে পেস্ট মাখুন। ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে দিনে তিনবার এটি করতে হবে।
টি-ব্যাগ: চা পাতায় প্রচুর পরিমাণে টনিক অ্যাসিড থাকে। যা পুড়ে যাওয়া স্থানের তাপ কমায়। এছাড়াও টি-ব্যাগ ক্ষত স্থানের ব্যথা ও যন্ত্রণা কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
২-৩টি ব্যবহৃত টি-ব্যাগ নিন। ব্যবহারের পর ঠান্ডা ও ভেজা টি-ব্যাগটি আক্রান্ত স্থানের উপর রাখুন। ১০-১৫ মিনিট রাখতে গজ ব্যবহার করতে পারেন। দিনে কমপক্ষে দু’বার এভাবে করুন।
বেকিং সোডা: জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য থাকায় বেকিং সোডা ক্ষত স্থানকে সংক্রমিত হতে দেয় না। এটি ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ ধরে রাখতে পারে, ফলে পুড়ে যাওয়ার ব্যথা ও যন্ত্রণা দ্রুত কমে যায়।
১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা ১২ টেবিল চামচ পানিসহ ব্লেন্ড করে নিন। পেস্টটি সরাসরি ক্ষত স্থানে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই তরিকা দিনে অন্তত ২-৩ বার অনুসরণ করা আবশ্যক।
নারিকেল তেল: নারিকেল তেল চামড়ার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে এবং নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে। এটি ক্ষত স্থানের জ্বালাপোড়া কমাতে পারে। পুড়ে যাওয়া যন্ত্রণা ও দাগ সারাতেও সাহায্য করে।
১-২ চা-চামচ নারিকেল তেল সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগান। আপনার ত্বক এটি শুষে নেওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। দ্রুত আরোগ্য পেতে দিনে তিনবার প্রয়োগ করুন।
দুধ: দুধে প্রচুর পরিমাণে জিংক ও প্রোটিন থাকে যা পোড়া ক্ষত শীতল ও নিরাময় করতে দ্রুত কাজ করে।
১৪ কাপ ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দুধ তুলোর মধ্যে নিয়ে ক্ষত স্থানে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্যথা ও পোড়া অনুভূতি না কমা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা পরপর এটি করুন।
ভিনেগার: ভিনেগার একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক। ভিনেগারে রয়েছে অ্যাসেটিক অ্যাসিড যা প্রদাহ কমাতে ও ব্যথা উপশমের জন্য সুপরিচিত। ছোটখাটো পুড়ে যাওয়া ক্ষত কমাতে ভিনেগার ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
২ চা-চামচ ভিনেগার ও ২ চা-চামচ পানি একত্রে মেশান। মিশ্রণটি তুলোয় করে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। দিনে ২-৩ বার এটি করতে পারেন।
তবে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৩
এসআইএস