ঢাকা: বাংলাদেশের রাজধানী যেখানে বসবাস করে প্রায় দুই কোটির বেশি মানুষ। ম্যাক্রোট্রেন্ডস.নেট এর সার্ভেতে দেখা যায়, বর্তমান প্রতি বছর তিন দশমিক ১৩ শতাংশ মানুষ আবাসস্থল হিসেবে ঢাকাকে নির্বাচন করছে।
এতো জনগণের জীবিকার তাগিদ না থাকলেও নির্দিষ্ট পছন্দের খাবারের তালিকা আছে, যা কিনতে যেতে হয় বাজারে। সাধারণ জনগণের চাহিদা পূরণ করতে প্রতিটি এলাকায় অন্ততপক্ষে একটি বাজার গড়ে উঠেছে, তাছাড়া সুপার শপগুলো তো আছেই, এছাড়াও অনলাইন এর যুগে বসবাস করছি আমরা সেই সুবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কিছু বাজার তৈরি হয়েছে।
কিন্তু এসব বাজারের সঙ্গে ‘ছোট’ শব্দটাও লেগে থাকে। বড় বাজার বলতে কিছু নেই। আছে কেন্দ্রীয় বাজার, যা ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় কারওয়ান বাজার হিসেবে পরিচিত। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে; ১৭শ শতাব্দী থেকেই এখানে বাজার ছিল। ১৮শ শতাব্দীর শেষের দিকে কারওয়ান সিং নামের একজন মারওয়ারি ব্যবসায়ী বর্তমান তেজগাঁও এলাকায় প্রথম বাজার খুলেন। তার নামেই এই বাজারের নামকরণ করা হয়েছে।
অন্যমতে, শূরী বংশের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতবর্ষের সম্রাট শেরশাহ শূরী (১৫৩৮-১৫৪৫) সুলতানি বাংলার রাজধানী সোনারগাঁও থেকে পাঞ্জাবের মুলতান পর্যন্ত চার হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘সড়ক-ই-আজম’ বা ‘গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড’ নির্মাণ করেন।
ইতিহাস বলে, সড়ক-ই-আজম কারওয়ান বাজারের পাশ দিয়ে অথবা কোনো সংযোগ সড়কের মাধ্যমে এই বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। এখানেও ছিল একটি সরাইখানা। এর ফরাসি শব্দ ক্যারাভাঁ, অর্থ সরাইখানা। ক্যারাভাঁ বা ক্যারাভেন থেকেই ক্যারাভাঁন বাজার, থেকে কালের পরিক্রমায় স্থানের নামকরণ হয়েছে কারওয়ান বাজার।
কারওয়ান বাজার মূলত পাইকারি বাজার। নির্দিষ্ট কোনো কৃষক বা উদ্যোক্তা সরাসরি এখানে পণ্য বিক্রি করতে পারেন না। কাওরান বাজারে কয়েক স্তরের পাইকারি ক্রেতা ও বিক্রেতা আছেন, যারা বিভিন্ন সিন্ডিকেট হিসেবে পরিচিত।
কোনো না কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই এখানে পণ্য বিক্রি করতে হবে আড়ত ব্যবসায়ীর কাছে। বিভিন্ন জেলার আড়ত ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে ন্যূনতম মূল্যে ট্রাক বা পিকআপভ্যানে করে কাঁচাবাজার পণ্য নিয়ে আসেন এই বাজারে। এখান থেকেই পাইকারি দরে ক্রমান্বিতভাবে বস্তা বা ক্যারেট অথবা পাল্লা হিসেবে কিনে দ্বিতীয় স্তরের পাইকারি বিক্রেতা, তারপর ভ্যান বা ছোট পিকআপভ্যানে করে নিয়ে আসে ছোট ছোট বাজারে খুচরা বিক্রেতার হাতে। যার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের হাতে পৌঁছায় এইসব পণ্য।
কারওয়ান বাজার ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার। এই বাজারের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এখানে প্রতিটা সবজি এবং ফলের জন্য আলাদা আলাদা নির্ধারিত আড়ত রয়েছে। রয়েছে মাছ এর বিশাল পাইকারি বাজার। এছাড়াও রয়েছে নির্ধারিত কামারপট্টি, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স মার্কেট, হার্ডওয়্যার ও স্যানিটারি মার্কেট, মুরগির আড়ত, জুতা ও জামা কাপড়ের বিশাল মার্কেট।
তাছাড়া রয়েছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জন্য খোলা বাজার। ফলের আড়তের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এখানে যাবতীয় সব দেশিয় ফল সবসময় পাওয়া যায়। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এই বাজার কেন্দ্র করেই।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
এসআইএ