জীবনে সবাই চায়, সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে। কিন্তু সুখ-শান্তির বড় অন্তরায় জাগতিক দুশ্চিন্তা।
১. সবুজ প্রকৃতিতে বসবাস
বিভিন্ন সময়ে চালানো গবেষণা মতে, সবুজের মধ্যে বসবাসে মানুষ সুখী হয় এবং দীর্ঘকাল বেঁচে থাকে। সম্প্রতি কানাডিয়ান গবেষকদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যখন মানুষ প্রকৃতির মধ্যে থেকে ফুল, পাখি, গাছ, নীল আকাশ দেখে, তখন এই প্রকৃতি-পরিবেশ তার মধ্যে সুখানুভূতির সৃষ্টি করে। মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। বাড়ায় সুখ-শান্তি।
২. গলা ছেড়ে গান
গলা ছেড়ে গেয়ে উঠুন! এর পেছনে বিজ্ঞান রয়েছে। গানে এনড্রোফিন ও অক্সিটোসিনের মতো মনকে চনমনে রাখা এবং পরমার্থিকতা বাড়ানো সুখী হরমোন নিঃসরণ হয়, যার ফলে উদ্বেগ ও চাপ কমে। গবেষণায় দেখা গেছে গান একাকিত্ব ও হতাশা দূর করতেও সাহায্য করে।
৩. দৌড়াদৌড়ি ও লাফ-ঝাঁপ
দৌড়াদৌড়ি বা লাফ-ঝাঁপ কেবল হার্ট কিংবা মেজাজ ভালো রাখে না। এটি ডায়াবেটিস, স্থূলতা, আর্থাইটিস বা বাত ও হতাশা দূর করে দেয়। প্রতিদিনের রুটিনে কমপক্ষে ৩০মিনিট হাঁটা, নাচ বা যোগ ব্যায়ামের জন্য রাখুন। সুখী থাকার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী উপায় এটি।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম
শরীর ও মনকে পুনরুজ্জীবিত করে নির্বিঘ্ন ঘুম। আবার অপর্যাপ্ত ও ব্যাহত ঘুম অস্বস্তি, খিটখিটে মেজাজ ও উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়। ভালো ঘুমের অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে। গবেষকরা বলে থাকেন, দিনে অন্তত সাত ঘণ্টা ঘুমোনো প্রয়োজন। ঘুমের আগে ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
৫. প্রচুর পানি পান
শরীরের ওজনের ৬০ শতাংশ হলো পানি। এই পানি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একেবারেই অপরিহার্য। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে, দেহের ভেতরের টক্সিনকে বের করে দেয়, চেতনা উন্নত করে, মেজাজ ও ঘুমের উন্নতি ঘটায়। প্রচুর পানি পান ওজন কমাতেও সাহায্য করে এবং ত্বক ভালো রাখে। পানির কর্তব্যই হলো দেহকে শান্তি ও সুখে।
৬. প্রয়োজন ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার নয়
স্মার্টফোন সারা দুনিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত থাকার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে একাকিত্ব, অমনোযোগ, ভালো ঘুম না হওয়া, ডায়াবেটিস ও বিষণ্নতা দেখা দিতে পারে। রাতে ঘুমোনোর আগে নিজের স্মার্টফোনটি বন্ধ করে দিন। ঘুম থেকে উঠে ম্যাসেজ কিংবা ইমেইলের রিপ্লাই দেওয়ার আগে মর্নিং পেপার পড়ুন। সময় নষ্ট করে এমন কিছু ডিলিট করে ফেলুন। পানি পান করতে হবে প্রচুর পরিমাণে
পানি পান করতে হবে প্রচুর পরিমাণে
৭. লিখে মনকে হালকা করুন
মনের মধ্যে যে ঝড় বইছে তা লেখার মাধ্যমে সুসংগঠিত রূপ দেওয়া যায়। টেক্সাস ইউনিভার্সিটির একটি অধ্যয়ন অনুযায়ী, নিয়মিত লেখালেখি দেহের রোগ প্রতিরোধের ইমিউন কোষকে শক্তিশালী করে। মনস্তাত্বিকেরা বলেন, মানসিক চাপের ঘটনাগুলো লিখে ফেলা হলে তা মন থেকে বের হয়ে চাপ কমে যায়। তাতে স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবগুলোও হ্রাস পায়।
৮. রঙের বাছ-বিচার
মনোবিদরা বলে থাকেন, মানসিকভাবে ভালো থাকার ক্ষেত্রে রঙের দারুণ প্রভাব আছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো রং নীল, সবুজ ও রক্তবর্ণ। পোশাক বাছাইয়েও এ রঙে নজর দিতে পারেন। কাজেই সময় খারাপ গেলে কোন রংটি আপনার মনকে শান্ত রাখতে পারে, তা নিশ্চয় বাছ-বিচার করতে পারবেন।
৯. পছন্দের গান শুনুন
যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, পছন্দের গান মন ভালো করে দেয়। তাই মেজাজ খারাপ হলে পছন্দের গানগুলো শুনুন। আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। সেজন্য প্রিয় গানগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে ফেলুন, আর অবসাদের মুহূর্তে সেগুলো শুনতে থাকুন। পোষা
১০. প্রাণী পুষতে পারেন
যারা প্রাণী পোষেন, তাদের শারীরিক কর্মক্ষমতা বেশি থাকে, যে কারণে তাদের হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, পোষা প্রাণীদের সান্নিধ্য একাকিত্বের উদ্বেগ ও অনুভূতি হ্রাস করতে সাহায্য করে। কাজেই পুষতে পারেন ময়না-টিয়া অথবা কুকুর-বিড়াল।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৪
এসআইএস