ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

রক্তাল্পতার জন্য ক্লান্ত লাগছে?

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৪
রক্তাল্পতার জন্য ক্লান্ত লাগছে? প্রতীকী ছবি।

অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা হলে আমাদের শরীরের লোহিত রক্ত কণিকা কমতে শুরু করে। আর লোহিত রক্ত কণিকা কমা মানেই হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া, যা একদমই শরীরের জন্য ভালো নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিটামিন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া, আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া, ব্লাড লস অ্যানিমিয়া, পারনিসিয়াস অ্যানিমিয়াসহ আরও অনেক ধরনের অ্যানিমিয়া হতে পারে।

অ্যানিমিয়া কেন হয়

* বিভিন্ন কারণে শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে গেলে এই অ্যানিমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।  
*অনেকেরই শরীরে আবার স্বাভাবিক রক্ত উৎপাদন হয় না। তাদের অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।  
*কারও-কারও আবার রক্ত দূষিত হয়ে যায়। অর্থাৎ নষ্ট হয়ে যায়। তাদেরও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।  
*বড় কোনো অস্ত্রোপচারের জন্যাও শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে যায়। তখন অ্যানিমিয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
*নারীদের শরীরে স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১১ দশমিক ৯। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা এর চেয়ে কমে গেলেই তাকে অ্যানিমিক বলা হয়।  
*পুরুষদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১৪।  
*হাড়ের মজ্জায় লোহিত রক্তকণিকা তৈরি হয়। হাড়ের কোনো অসুখ থাকলে এর স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে রক্তাল্পতার ঝুঁকি বাড়ে।

লক্ষণ

*অ্যানিমিয়া হলে প্রচন্ড ক্লান্তি অনুভব হয়। ফলে মানুষ ঝিমিয়ে পড়েন, কর্মক্ষমতা হারায়।  
*অ্যানিমিয়ার শিকার হলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। হঠাৎই বুকের ভেতর ধুকপুকানি বেড়ে যায়।  
*কারণ ছাড়াই শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
* যেহেতু রক্তের হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন পরিবহন করে, তাই এই হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে দেহের সর্বত্র অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ হয় না। ফলস্বরূপ সব কাজে হাঁপিয়ে ওঠে আক্রান্ত ব্যক্তি। অল্প কাজ করেও ক্লান্ত হয়ে পড়েন অনেকে।
*অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রক্তাল্পতার প্রভাব পড়তে শুরু করে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের রঙে। রক্তাল্পতা থাকলে ফ্যাকাশে হয়ে যায় শরীর। বিশেষত চোখের ভেতরের মাংস পেশিগুলো লালাভ রং হারিয়ে ফেলে।
* আয়রনের অভাবে যেমন রক্তাল্পতা হয় তেমনই এর প্রভাবে চুলও পড়ে যেতে পারে। কাজেই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাও রক্তাল্পতার লক্ষণ হতে পারে।
* রক্তাল্পতা ডেকে আনে ক্লান্তি ও বিষণ্ণতা। ডেকে আনতে পারে মাথা ব্যথাও। ফলে কিছু ক্ষেত্রে রোগী মানসিক অবসাদের শিকার হতে পারেন। মনে রাখবেন সময় মতো চিকিৎসা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু তা না হলে ঘটতে পারে বহুবিধ বিপদ।

প্রতিকার

আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া ছাড়াও অ্যানিমিয়ার বেশকিছু প্রতিকার রয়েছে। এমন কিছু খাবার আছে, যা আপনার ডায়েটে যোগ করলে কমবে রক্তাল্পতার সমস্যা।  

কী খাবেন

ভিটামিন ‘সি’র অভাবে হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে। তাছাড়া ভিটামিন ‘সি’ ছাড়া আয়রন পুরোপুরিভাবে শোষণ হয় না। আমলকি, পেঁপে, বাতাবিলেবু, কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, গোলমরিচ, ব্রকোলি, আঙুর, টমেটো ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে লোহা গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আয়রন সমৃদ্ধ কিছু খাবার হলো, দেশি সুস্থ মুরগির কলিজা, কচু শাক, লাল মাংস, চিংড়ি, পালংশাক, আলমন্ড, বিট, খেজুর। আয়রন, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেইড এবং ফাইবার সমৃদ্ধ বেদানা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।  

দিনে এক বার হলেও সামান্য হলুদের গুড়া মিশিয়ে টক দই খেলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা অনেকটা দূর হয়। মধু আয়রনের একটি ভালো উৎস। আয়রন ছাড়াও মধুতে কপার ও ম্যাঙ্গানিজ আছে। এ উপকরণগুলো শরীরে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে হিমোগ্লোবিন প্রস্তুত করতে সহায়তা করে। নিয়মিত দুধ, ডিমও খেতে হবে।  

অ্যানিমিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন ও পুষ্টিকর উপাদান উৎপাদনের জন্য হৃৎপিণ্ডের প্রচুর পরিমাণে রক্তের প্রয়োজন হয়৷ এতে হার্ট ফেল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এজন্য অ্যানিমিয়া হলে শুরু থেকেই চিতিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ জেনে সেই অনুযায়ী খাবার ও ওষুধ খেতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।