শিশুরা দুষ্টুমি করবেই। আদর আর শাসনের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই সন্তানকে বড় করে তুলতে হবে।
স্কুল থেকে ফেরার পর পরই পড়তে বসাবেন না। অনেক বাবা-মা তা-ই করেন। স্কুল থেকে ফেরার পর প্রথম কাজ হল খেলাধুলা করা। পড়তে বসানোর আগে অন্তত ১ থেকে ২ ঘণ্টা শিশুকে খেলতে দিতে হবে।
ঘরে হোক বা বাইরে, খেলার সময় যেন কম না হয়। তবে বাইরে দৌড়দৌড়ি করে খেলাই সবচেয়ে ভালো। এতে শিশুর ক্লান্তি ও একঘেয়েমি কেটে যাবে। শিশুর যদি বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ থাকে, যেমন, ছবি আঁকা, আবৃত্তি, নাচ, গান, যোগব্যায়াম ইত্যাদি, তা হলে সেগুলোও শেখাতে পারেন। পড়াশোনার বাইরেও বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকা ভালো।
পড়তে বসান সন্ধ্যার দিকে। প্রতি দিন নির্দিষ্ট সময় রাখুন পড়ানোর জন্য। দেখবেন, খুদে সেই সময় ধরেই পড়তে বসছে।
একটানা পড়ালে হবে না। মাঝে ছোট ছোট বিরতি দিতে হবে। সেই সময়ে মোবাইল হাতে দেবেন না অথবা শিশু যেন টিভি দেখতে বসে না যায়, তা খেয়াল রাখতে হবে। বিরতির সময়ে গল্প করুন। স্কুলে কী কী হলো তা জানতে চান। অনেক সময়েই স্কুলের বিভিন্ন সমস্যা লুকিয়ে যায় খুদেরা। বন্ধুদের ব্যাপারেও জানতে চান। শিশুর সঙ্গে কথোপকথন খুব জরুরি। ওকে বোঝাতে হবে যে আপনি সবসময়ে পাশেই আছেন। তা হলেই ভরসার জায়গা তৈরি হবে। শিশু আপনাকে মিথ্যা কথা বলবে না।
সন্তান কিছুটা বড় না হওয়া পর্যন্ত পড়তে বসলে তার সামনে থাকুন। এমন একটা সময় তার পড়ার জন্য বরাদ্দ করুন, যাতে অফিস সামলে সেই সময়টা আপনিও বাড়িতে থাকেন। সামনে থাকলে ওর ভুলে যাওয়ার কারণ, কোথায় ঘাটতি সেসব বোঝা অনেক সহজ হবে।
সন্তান যা পড়ছে বা আপনি যা বোঝাচ্ছেন, তা আপনাকে পাল্টা বোঝাতে বলুন। এটা করতে সক্ষম হলে বুঝবেন, পড়া বুঝতে বা মনে রাখতে তার আর সমস্যা হবে না। যতটুকু পড়াচ্ছেন তা লিখে ফেলতে বলুন। লিখে ফেললে পড়া সহজেই মনে রাখতে পারবে।
শিশুর ক্ষেত্রে ছবি ও ব্লকের সাহায্য নিন। পড়ার বিষয়টি ছবি এঁকে বোঝাতে পারেন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে দৃশ্যের ব্যবহারও খুব কাজে আসে। দরকার হলে বিভিন্ন ছবি এঁকে চার্ট পেপার বানান। শিশুর পড়ার জায়গায় ঝুলিয়ে রাখুন। রোজ দেখতে দেখতে ওর বিষয়গুলো বুঝতে সুবিধা হবে।
ইতিহাস বা সাহিত্যের কোনো বিষয় হলে গল্পের ছলে বোঝান। ছোট ছোট উত্তর লিখে দিন। সেগুলো পড়ে ও লিখে অভ্যাস করতে বলুন। তা হলেই যা পড়াচ্ছেন তা মনে থাকবে ওর।
পড়া পারলে এটা-ওটা কিনে দেওয়ার লোভ দেখাবেন না। এতে মনঃসংযোগ তো বাড়েই না, উল্টে নিজের কর্তব্যের প্রতি দায়বদ্ধতাও আসে না। বরং প্রশংসা করুন। যতটুকু পারছে তাতেই উৎসাহ দিন। দেখবেন বাকিটা নিজের আগ্রহেই করে নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৪
এএটি