ঠাণ্ডা হাওয়ায় বা এসির বাতাসে শীত অনুভূত হতেই পারে। কিন্তু সব সময় শীত লাগাটা অন্য কিছুর লক্ষণ হতে পারে।
১. আপনি খুব বেশি হালকা-পাতলা হলে এমন ঘটতে পারে। বিএমআই ১৮.৫ অথবা এর কম হলে শীত অনুভূত হতে পারে। দেহে চর্বির পরিমাণ কম থাকলে গরম কম অনুভূত হয়।
২. থাইরয়েড গ্রন্থিতে সমস্যা দেখা দিলে সব সময় ঠাণ্ডা লাগতে পারে। তাছাড়া সব সময় ঠাণ্ডা লেগে থাকা হাইপোথাইরডিজমের লক্ষণ।
আদর্শ পরিমাণ থায়রয়েড হরমোনের অভাবে বিপাকক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। এতে দেহে তাপ উৎপন্ন হয় না। ফলে শীত অনুভূত হতে পারে।
৩. দেহে আয়রনের ঘাটতি থাকলে ক্রনিক কোল্ডনেস দেখা দিতে পারে।
এই খনিজটি রক্তের লোহিত কণিকাকে গোটা দেহে অক্সিজেন বয়ে নিতে সহায়তা করে। দেহের গোটা প্রক্রিয়ায় তাপ ও শক্তি জোগায় আয়রন। এর অভাব থাইরয়েড গ্রন্থিকে আদর্শভাবে কাজ করতে বাধাগ্রস্ত করে।
৪. অনেকের এমন হয় যে হাত দুটো ঠাণ্ডা অনুভূত হয়, কিন্তু দেহের বাকি অংশ স্বাভাবিক লাগে। এ ক্ষেত্রে দেহে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে ধরে নিতে পারেন।
কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা অন্যতম কারণ হতে পারে। এর অর্থ হলো, আপনার হৃদযন্ত্র সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে পারছে না। আরেকটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে বিশেষ এক রোগ যাকে বলা হয় ‘রেনডস’। এটি হাতের রক্ত চলাচলকারী শিরাগুলোকে সরু করে দেয়। ফলে হাত দুটো ঠাণ্ডা অনুভূত হয়।
৫. ঘুমের অভাবেও দেহ শীতল মনে হয়। তবে ঘুমের অভাবে কেন এমন হয় তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিশেষজ্ঞের ধারণা, স্ট্রেটের কারণে এবং আরাম না পাওয়ায় এমন হতে পারে। এতে করে হাইপোথ্যালামাসের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ফলে দেহে তাপ উৎপাদানের সঙ্গে মস্তিষ্কের যে অংশটি কাজ করে তা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
৬. প্রাপ্তবয়স্কদের দেহের ৬০ শতাংশ পানিতে পূর্ণ থাকে। দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণে পানির ভূমিকা রয়েছে। দেহে যথেষ্ট পরিমাণ পানি থাকলে তা তাপ ধরে রাখে এবং ধীরে ধীরে ত্যাগ করে। এতে ভারসাম্য বজায় থাকে। কিন্তু পানির অভাব ঘটলে দেহের তাপমাত্রার বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে।
৭. প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন বি১২ না গ্রহণ করলেও এমন হয়। গোটা দেহে অক্সিজেন প্রবাহে কাজ করে বি১২। এর অভাবে লোহিত রক্তকণিকার অভাব ঘটে। এতে ‘ক্রনিক কোল্ডনেস’ ঘটে।
৮. নারীদের দেহে অনেক সময় এমন অনুভূত হয়। পুরুষদের চেয়ে নারীদের দেহ বেশি উষ্ণ থাকে। কারণ, নারী দেহে হৃদযন্ত্র বা মস্তিষ্কের মতো বড় প্রত্যঙ্গে রক্ত চলাচল বেশি থাকে। ফলে হাত এবং পায়ের মতো অঙ্গগুলোতে কম রক্ত চলাচল শুরু করে। এতে এই অঙ্গগুলো ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এতে হাত-পায়ের মতো অঙ্গের তাপমাত্রা ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
৯. ডায়াবেটিস থাকলেও এমন হতে পারে। এ রোগের কারণে দেহে এমন এক অবস্থার সৃষ্টি হয় যার নাম ‘পেরিফেরাল নেফ্রোপ্যাথি’। এই অবস্থায় স্নায়ুতন্ত্রে এক ধরনের শিরশিরে অনুভূতি হয় যার কারণে শীত লাগতে পারে।
১০. দেহের পেশি তাপ উৎপাদনে সক্রিয় থাকে। যাদের দেহের পেশির অবস্থা শোচনীয়, তাদের শীত অনুভূত হতে পারে। তাই পেশির অবস্থার উন্নতি ঘটালে এ অবস্থা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৪
এএটি