প্রকৃতির নানা রূপ ধারণ করা ষড় ঋতুর দেশে এখন গ্রীষ্ম কাল। এই গরমে একটু স্বস্তি পেতে চলে কত আয়োজন আর ছুটোছুটি তারপরেও মেলে না মনের মতো একটি জায়গা।
সারাদিন জলকেলী উৎসবে মেতে উঠতে অনন্য এক আয়োজন যা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। । সি-ওয়ার্ল্ড গড়ে তোলা হয়েছে সবুজে ঘেড়া মনোরম ফয়’স লেকের এক পার্শ্বে। ফয়’স লেকের বোট স্টেশন থেকে মাত্র দশ মিনিটের পথ পেরোলেই দেখা মিলবে ওয়াটার পার্ক সি-ওয়ার্ল্ডের। এখানে খেলার জন্য রয়েছে অনেকগুলো রাইডস নিয়ে অত্যন্ত আর্কষণীয় ভাবে সাজানো হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ এই ওয়াটার পার্ক।
সি-ওর্য়াল্ডের সবচেয়ে আর্কষণীয় স্থান ওয়েভ পুল, সাগড়ের ঢেউয়ের মতো বিশাল আকারের কৃত্রিম ঢেউ আছড়ে পড়ে ওয়েভ পুলে আর এই ওয়েভ পুলের ঠিক সামনের স্টেজে চলে ডিজে শো। গতিময় ঢেউ আর ডি-জে মিউজিকের তালে তালে নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে অতিথিরা। ওয়েভ পুলের ঢেউয়ের পানিতে টিউবে চড়ে ভেসে থাকার মজা যা শুধু কথায় প্রকাশ করা যায় না। ওয়েভ পুলের ঠিক পাশেই ড্যান্সিং জোনে কৃত্রিম বৃষ্টি, মন মাতানো মিউজিক আর রঙ্গিন বাতির আলোক ঝর্ণায় নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাসে মন হারিয়ে যায় অন্য কোনো জগতে।
বা”চাদের খেলার জন্য রয়েছে আর্কষণীয় অনেকগুলো রাইডস্ নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে চিলড্রেন পুল। পরিবারের সবাই এক সঙ্গে আনন্দে মাততে এখানে রয়েছে ফ্যামিলি পুল, এর অন্যতম আর্কষণীয় রাইড, এই রাইডে চড়লে খুব দ্রুত গতিতে নিচের পানিতে লাফিয়ে পড়ে। আরও রয়েছে বিশাল আকৃতির টিউব-স্লাইড, মাল্টি-স্লাইড, টানেল স্লাইড, ড্রাই স্লাইডসহ নানা রকম আয়োজন প্রতিটা রাইডই যেন উল্লাসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
পানিতে নেমে উল্লাস করার প্রয়োজনীয় পোশাকের জন্য রয়েছে গিফট শপ। পোশাক পরিবর্তনের জন্য পুরুষ ও নারীদের ভিন্ন ভিন্ন চেঞ্জিং রুম আর প্রয়োজনীয় জিনিস নিরাপদে রাখার জন্য রযেছে লকার-সিস্টেম। সি-ওয়ার্ল্ডে খাবারের জন্য রয়েছে ফুড কর্নার যেখানে চা কফি আইসক্রিম চিপসসহ নানা রকম মুখ-রোচক খাবার। দুপুরের খাবারের জন্য রয়েছে দেশি চাইনিজ ইন্ডিয়ান খাবারের আয়োজন নিয়ে আধুনিক রেস্টুরেন্ট তাই খাবার নিয়ে বাড়তি কোনো চিন্তা নেই।
ফয়’স লেকে অতিথিদের জন্য আরও রয়েছে অবজারভেশন টাওয়ার। এখান থেকে দূরবীণের সাহায্যে দেখা যাবে চট্টগ্রাম শহর। পিজন স্কয়ারে খাবার ছিটালে পার্কের কবুতরগুলো উড়ে এসে বসে দর্শনার্থীদেও গায়ে। হ্রদের পাশেই নানা রকম সামুদ্রিক প্রাণীর ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো হযেছে এ্যাকোয়টিক জোন যা পিকনিক স্পট হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। নৌ-ভ্রমণের জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। কেউ চাইলে প্যাডেল বোট, ইঞ্জিন বোট কিংবা স্পিড বোট নিয়ে ঘুড়তে ঘুড়তে দেখতে পাবে সংরক্ষিত সবুজ আর বুনো খরগোশ আর হরিণের ছুটে চলা। সন্ধ্যার মৃদু আলোতে হ্রদের পাড় আড্ডায় মুখরিত হয়ে উঠে ।
পার্কের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, সবুজের মাঝে গড়ে ওঠা এই বিনোদন কেন্দ্র সারা বছরই দেশি বিদেশি পর্যটক আসেন। তবে গরমের এই সময়ে একটু স্বস্তি পেতে সবার কাছে হয়ে ওঠে অনিবার্য গন্তব্য।