ঢাকা: ইফতারিতে হালিম না খেয়ে রাতে ঘুমাবার আগে অল্প পরিমাণ হালিম খাওয়া উচিৎ। আযানের একটু আগে সেহরি খেলে শরীরে সারাদিন এনার্জি পাওয়া যাবে।
শনিবার (১৩ জুন) বিকেলে ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া হাউসের কনফারেন্স কক্ষে আসন্ন রমজানের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত এক আলোচনা সভায় এসব পরামর্শ দিয়েছেন এ্যপোলো হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সমন্বয়ক ডা. এহসান ও এ্যপোলো হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী।
‘‘সুস্থ থেকে রোজা পালন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।
তামান্না চৌধুরী বলেন, রোজার মাসে তিনভাবে আমরা সুস্থ থাকতে পারি। প্রথমত আমাদের খাবারে ব্যালেন্সিং করে, দ্বিতীয়ত খাবারের মডারেশন করে, তৃতীয়ত খাবারের ডিরিগেশন করে।
রোজার মাসে সুস্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোজায় আমরা ইফতারির সময় হালিম না খেয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পরিমাণমতো হালিম খেতে পারি। ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবারের ভিন্নতা থাকতে হবে। যেমন আজ যদি কেউ ইফতারিতে বেগুনি রাখেন পরের দিন পেয়াজু রাখবেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমরা ডাব কিনে খেতে পারি না সে ক্ষেত্রে ইসুপগুল বা বেলের শরবত খাওয়া যেতে পারে। ইফতারির পরে চিনি ছাড়া যে কোনো ফলের জুস খেলে পেট ঠান্ডা থাকবে। এছাড়া ছোলাতে শশা, টমেটো মাখিয়ে খেলে তা হবে আরও পুষ্টি সম্মত।
‘ইফতারিতে কাবাব থাকলে রাতে মাংস না খাওয়াই ভালো’ এমন পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, রোজার মাসে ঝোল জাতীয় রান্না কম খেতে হবে।
তামান্না চৌধুরী বলেন, ইফতারিতে কম খেতে হবে। রাত ৯টার মধ্যে রাতের খাবার খেলে হজম হতে সুবিধা হবে। সেহরি আযানের একটু আগে করলে সারাদিনের ক্লান্তি কমে আসবে। এছাড়া ইফতার থেকে শুরু করে সেহরির আগ পর্যন্ত কমপক্ষে দুই লিটার পানি খাওয়ারও পরামর্শ দেন এই পুষ্টিবিদ।
‘ঈদের দিন রোগী বেশি পাওয়া যায়’ পেশাগত জীবনের এই অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা মাস রোজা রেখে ঈদের দিন অনেকে অসুস্থ হয়ে পরেন।
তাই ঈদের আগের রাতে হালকা খাবারের সাথে এক গ্লাস দুধ খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।
অ্যাপোলো হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সমন্বয়ক ডা. আহসান বলেন, অনেকের হার্টের সমস্যা, ডায়বেটিস, প্রেসারসহ নানা ধরনের রোগ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাজা-পোড়া খাবার এড়িয়ে চলার কোন বিকল্প নেই। আরো ভালো হয় যদি এগুলো একেবারেই না খেলে।
এছাড়া এসব রোগীর ক্ষেত্রে শরীর চেকআপের মাধ্যমে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখা উচিৎ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন,‘শুধু তাই নয়। রোজার মধ্যে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়। তাই আমার পরামর্শ রোজার আগে প্রত্যেকের একবার করে নিজের শরীর চেকআপ করা’।
বাংলানিউজের লাইফস্টাইল এডিটর শারমীনা ইসলামের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের লাইফস্টাইল ইনচার্জ রনক ইকরাম।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রান্না বিশেষজ্ঞ টনি খান, হুমায়ন কবীর, লবি’স কুকিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি লব্বি রহমান, সৃষ্টি ফুড ক্রিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা তাসনিয়া রহমান সৃষ্টি, অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের পরিচালক ইরফান আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহায়তায় রয়েছে অরুনিমা গলফ রিসোর্ট। আলোচনায় পবিত্র রমজানে আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরিবর্তন ও বিশেষ করে খাদ্যাভাস সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৫
জেডএফ/আরআই
** ইফতারে ভাজা-পোড়া নয়
** রমজানে বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে