হাতে তৈরি মোটা খাদি কাপড়ে লেগেছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। আশির দশক থেকে খাদি কাপড়কে আধুনিক রূপ দিতে কাজ করছে বেশ কিছু ফ্যাশন হাউস ও এনজিও।
তবে ঐতিহ্যবাহী খাদিশিল্প বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায়। খাদির হারানো ঐতিহ্য ফেরাতে ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অফ বাংলাদেশ (এফ, ডি ,সি, বি) ১১ ও ১২ ডিসেম্বর হোটেল রেডিসনে খাদি প্রর্দশনী ও খাদি নির্ভর ফ্যাশন শোর আয়োজন করে।
এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের ডিজাইনাররা। এমদাদ হক, মাহিন খান, শৈবাল সাহা, চন্দনা দেওয়ান, লিপি খন্দকার, বিপ্লব সাহা, হুমায়রা খান, মারিয়া সুলতানা, কুহু প্লামোন্দন, ফারাহ আনজুম বারী, শাহরুখ আমিন, শাবানা আলী, নওশিন খায়ের, তেনজিং চাকমা, রিফাত রেজা, আফসানা ফেরদৌসি, ফারাহ দিবা ও সামিয়া রফিক অংশ নেন বাংলাদেশ থেকে।
ভারত থেকে এসেছিলেন সায়ন্তন সরকার, পারমিতা ব্যানার্জি, সংযুক্তা রায়, শান্তনু দাশ, রিমি নায়েক ও দেবারুণ মুখার্জি। অনুষ্ঠানটির মূল পৃষ্ঠপোষক ছিল ট্রেসেমে।
ডিজাইনাররা খাদি কাপড়ের পোশাকে আধুনিক রূপ দিয়েছেন, আর ফ্যাশন শো-তে মডেলদের জমকালো উপস্থাপনের মাধ্যমে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
খাদির দিন আবার ফিরে আসবে..এই প্রত্যাশায় শেষ হয়, এবারের খাদি উৎসব।
দেশের নাম করা সব ফ্যাশন হাউসে গেলে আমরা সাজানো দেখি খাদি কাপড়ের পোশাক। দামও খুব কম নয়, কিন্তু এই খাদি যারা তৈরি করেন, তাদের জীবন কীভাবে চলছে? কুমিল্লার তাঁতী চিন্তাহরণ বাংলানিউজকে বলেন, একগজ খাদি কাপড় বিক্রি করে তিনি পান ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সারা সপ্তাহে স্ত্রী আর ছেলেকে নিয়ে যে পরিমাণ কাপড় তৈরি করেন, সেই কাপড় বিক্রির টাকায় সংসার চালাতেই কষ্ট হয়।
খাদি উৎসব হয়েছে তিনি জানেন কি না? এ বিষয়ে বেশ ক্ষোভ থেকেই তিনি বলেন, এসব দিয়ে তাঁতীদের কোনো উন্নতি হয় না। শহরের দোকানের মালিকরা একটার পর একটা দোকান নেয়(তিনি ফ্যাশন হাউসের নতুন শাখা বোঝাতে চেয়েছেন) কিন্তু আমরা কোনো সুবিধা পাই না।
সব শেষে বলতে চাই, আমরা সবাই মিলে দেশি পোশাক পরার প্রতি যেমন দৃষ্টি দেব, তেমনি তাঁতীরা যেন ঐতিহ্যের এই পেশাকে সন্তুষ্টির সঙ্গে ধরে রাখতে পারেন, সে চেষ্টাও থাকতে হবে।