ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

২৪ ঘণ্টা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
২৪ ঘণ্টা!

রাত ১২ ছুঁই ছুঁই, হঠাৎ মনে হলো, বাসার এতো কাছে অভিনেতা রিয়াজ তো ২৪ ঘণ্টার রেস্টুরেন্ট ‘ফুড২৪*৭’ দিয়েছেন! চিত্র নায়ক বলে নয়, বরং এই রেস্টুরেন্টের কিচেন সবার জন্য উন্মুক্ত জেনেই সেখানে যাওয়ার আগ্রহ ছিল।

বসুন্ধরা আবাসিকে যাদের বসবাস তারা নিশ্চয় এতোদিনে জেনেছেন, জিপি হাউস (গ্রামীণ ফোন) পার হয়ে গেটের দিকে যেতে হাতের বায়ে একটি বাণিজ্যিক ভবনের দোতলায় এই রেস্টুরেন্টের অবস্থান।

লাল গালিচা বিছানো সিঁড়ি বেয়ে কিছুটা উঠতেই স্বচ্ছ কাঁচের ভেতর থেকে চোখে পড়ে রেস্টুরেন্টের হেঁসেল/অন্দরমহল। দোতলায় লাল, নীল, সবুজ ও কমলা রংয়ের বেলুন দিয়ে সাজানো। সুদৃশ্য ও পর্যাপ্ত লাইটিং। খুব বড় না হলেও ভেতরটা বেশ গোছালো ও সুসজ্জিত।

সিঁড়ি পার হয়ে ওপরে গিয়ে দেখি শুধু রেস্টুরেন্ট খোলা রয়েছে তা-ই নয় ভোজন রসিকদের ভিড়ও কম নয়।

আগত কাস্টমারদের দেখে স্বচ্ছ কাঁচ ঘেরা ছোট্ট বারান্দা থেকে ভেতরে এসে স্বাগত জানালেন বিনয়ী রিয়াজ। আমরাও শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম।

আমাদের জন্য ওয়েটারকে বললেন ছোট তিনটি টেবিল জোড়া লাগিয়ে দিতে। টুকটাক কথায় তিনি বললেন, আপনারা খান, আমি পরে আবার কথা বলবো। এরপর তিনি বারান্দায় গিয়ে তার তিন/চারজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন। কিছুক্ষণ পর ছয়জনের আরো একটি দল এলো ফুড২৪-এ। ছুটে এসে তাদেরও একইভাবে স্বাগত জানালেন রিয়াজ।

নিজের বাড়িতে যেভাবে মানুষ মেহমানদারি করে, তার আন্তরিকতা তেমনই লাগলো। পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন শেফ টনি খান। তিনিও হাসি মুখে স্বাগত জানিয়ে নিজের কাজে মন দিলেন।

এরপর কাস্টমারদের সুন্দর ছোট কাচের গ্লাসে করে ফলের জুস দিয়ে স্বাগত জানানোটা বেশ উপভোগ্য ছিল। এরকম খুব একটা চোখে পড়েনা।

এখানকার মেনুতে হালকা থেকে ভারি, মুখোরোচক বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয় রয়েছে। যার দাম আশপাশের আর ১০টি রেস্টুরেন্টের চেয়ে বেশি নয়।

রাতে ভারি খাবার খেয়ে বের হয়েছি বলে আমরা কেবল কফি, লাচ্ছি ও ব্যাটার্ড ফিস ফিংগার অর্ডার করলাম। খাবারের মান বেশ ভালো। আর টনি খান যেখানে আছেন সেখানে খাবারের মান ও স্বাদ তো থাকবেই। সেই সাথে রিয়াজ পরিবারের আতিথিয়তাতো আছেই।

এরই মধ্যে সেখানে এসে হাজির হলেন রিয়াজের স্ত্রী তিনা। সঙ্গে তাদের ফুটফুটে প্রিন্সেস আমিরা। বাবা-মাকে মিডিয়ায় দেখা গেলেও এটিই ছিল আমাদের প্রথম আমিরা দর্শন। এতো রাতেও জেগে আছে ছোট্ট শিশুটি। মিডিয়ার বাবা-মা তাই হয়তো শিশু আমিরাও রাত জাগায় অভ্যস্ত।

এসময় সবারই আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হলো সে। মধ্যরাতে এখানে রিয়াজের দেখা মিলতে পারে বলে ধারণা থাকলেও তার স্ত্রী ও কন্যার দেখা পাওয়ায় সত্যিই ভালো লাগছিল। কিছুক্ষণ পর রিয়াজের স্ত্রী নিজেই হাতে ক্যামেরা নিয়ে কাস্টমারদের অনুমতি নিয়ে ছবি তুলছিলেন। একেবারেই এক ঘরোয়া পরিবেশ যাকে বলে।

রাত বিরাতে যারা ঘুরতে পছন্দ করেন, বসুন্ধরায় অবস্থিত অনেক অফিসেই যাদের নাইট ডিউটি করতে হয় মধ্যরাতে রিয়াজ দম্পতির আতিথেয়তা তাদের জন্য এক অনন্য সুযোগ। রাতে কাজ করতে করতে ক্ষুধা লেগে গেলে এই রেস্টুরেন্টে ফোন করলেই এসে যাবে আপনার পছন্দের খাবার। ইচ্ছে করলে একটু গিয়েও খেতে পারেন। ডেলিভারির জন্য কোনো ফি দিতে হয়না। ৫০০ টাকার খাবার অর্ডার দিলেই আছে ডেলিভারির সুযোগ। খাবার হাতে পাওয়ার পরই পেমেন্ট করতে হবে। সব ধরনের খাবারই এখানে আছে। সকালের নাস্তা, সারাদিনের খাবার, পানীয় ও এমনকি রাতের খাবারও আছে এ রেস্টুরেন্টে। শহরের কর্মব্যস্ত সময়ের ফাঁকে হ্যাং আউট করতে চাইলে ঘুরে আসুন ফুড ২৪*৭ রেস্টুরেন্টে।

লেখক: শিমুল সুলতানা, কান্ট্রি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।