ভারতের ডায়াবেটিস গবেষণা কেন্দ্রের (আইডিআরএফ) সভাপতি ও ডাক্তার এ রামচন্দ্র ডায়াবেটিস হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. এ রামচন্দ্র জানান, তথ্য-প্রযুক্তি খাতের পেশাজীবী তরুণ-তরুণীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ছে। কাজের চাপে এবং স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীন থাকার কারণে তারুণ্যেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা।
ডা. এ রামচন্দ্র বলেন, শহুরে মানুষদের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি এবং জীবন-যাপনের অনিয়মের কারণেই তাদের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। একসময় পুরো বিশ্বই যখন নগরে পরিণত হবে তখন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাবে।
তবে আশার কথা জানিয়ে ডা. রামচন্দ্র বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান আইডিআরএফ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, জনগণ সচেতন হলে এমনিতেই ৩৬ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন।
ডা. রামচন্দ্র বলেন, জীবন যাপনে একেবারেই অনিয়মের কারণে অনেক শিশুও ডায়াবেটিস আক্রান্ত হচ্ছে। এটা টাইপ ২ ডায়াবেটিস বলে পরিচিত।
আইডিআরএফ পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার এশিয়া ও আমেরিকায় বেশি দেখা যাচ্ছে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ৬০ বছর বয়সী আমেরিকান নাগরিক ও ৪৫ বছর বয়সী এশিয়ান- বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের নাগরিকরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, তথ্য-প্রযুক্তি তথা অনলাইননির্ভর পেশায় যারা রাত জেগে কাজ করছেন তারাই ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে ডায়াবেটিসে আক্রমণ করার কারণ ব্যাখ্যা করে বলা হয়, কাজের চাপ একজন মানুষের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কাজে চাপ মানুষের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে রোগপ্রতিরোধক হরমোনগুলোক অকেজো করে দেয়।
পরিবারের কোনো সদস্যের যদি উচ্চরক্তচাপে ভোগার পরম্পরা থাকে তাহলে এসব কারণে খুব অল্প বয়সেই উত্তরসূরীকে এই রোগে ভুগতে হবে।
ফাস্টফুড খাওয়ার কারণে ধূমপান ও কোমল পানীয় পানের মতোই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, কেউ যদি কাজের ধরন পরিবর্তন করতে না পারেন, তবে তিনি যেন অন্তত খাবার গ্রহণের ব্যাপারে নিয়মিত হন এবং চর্বি জাতীয় ও মিষ্টি জাতীয় খাবারের ব্যাপারে সংযত হন। অনেক বেশি সবজি খেতে হবে এবং প্রতিদিন অন্তত ২/৩টি ফলমূল খেতে হবে। খাবার অভ্যাসে পরিবর্তন আনলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে।
ঘুমাতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে। কম্পিউটারের সামনে থেকে অন্তত দু’ ঘণ্টা পরপর ওঠার অভ্যাস করতে হবে এবং হাঁটাহাঁটি করতে হবে।