এসময় নারীকে স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে খাবার থেকে আপনার এবং আপনার গর্ভের শিশুটির সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো না খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
আনারস
আনারসে প্রচুর পরিমাণ খনিজ উপাদান ও প্রোটিন থাকে যা পাকস্থলীর বিভিন্ন ইনফেকশন দূর করে। তাতে গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে আনারস খেলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া আনারসে ব্রোমেলিয়ান নামক উপাদান থাকে যা ডায়রিয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকতে আনারস না খেলেই ভালো।
ডিম
পুষ্টিগুণের বিচারে ডিমকে গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকার উপরে রাখা হয়। কাঁচা বা আধা সিদ্ধ ডিম গর্ভধারিণী মা এবং বাচ্চা উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় ডিম অবশ্যই ভেজে, সম্পূর্ণ সিদ্ধ বা রান্না করে খাবেন। কাঁচা ডিমের তৈরি খাবার (যেমন: মেয়োনিজ) গ্রহণ করা থেকেও বিরত থাকুন।
শাকসবজি এবং ফল ধুয়ে খান
শাকসবজি এবং ফল খাবার আগে অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে খাবেন। শাকসবজি বা ফলের গায়ে বিভিন্ন পরজীবী (টক্সোপ্লাজমা) থাকে যা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।
পেঁপে
পেঁপে পাকা হলে কোনো সমস্যা নেই তবে কাঁচা বা আধা-পাকা পেঁপের মধ্যে ল্যাটেক্স থাকে যা ইউটেরিন কন্ট্র্যাকশন ঘটায়; এটি গর্ভের শিশুর ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। সেজন্যই গর্ভাবস্থায় খাবার নির্ধারণে কাঁচা বা আধা পাকা পেঁপে এড়িয়ে চলুন।
মাংস
কাঁচা মাংসের মধ্যে থাকে স্যালমোনেলা, কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এবং টক্সোপ্লাজমোসিস যা গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। গর্ভাবস্থায় খাবার নির্বাচনে টাটকা রান্না করা মাংসকে প্রাধান্য দিন। মাংস পুনরায় গরম করলে তাতে লিস্টেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে যা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
মাছ
গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় মাছ না থাকলে চলে? কিন্তু মার্কারিযুক্ত সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আর কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ মিশ্রিত হয় এমন মাছে পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল মিশ্রিত থাকতে পারে। এ ধরনের পদার্থ গ্রহণে খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে শিশুর ক্ষতি হতে পারে।
জুস
গর্ভাবস্থায় ফলের জুস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু সেটা অবশ্যই পাস্তুরিত হতে হবে।
দুধ
কাঁচা এবং অপাস্তুরিত দুধ এবং এর তৈরি কোন খাবার (পনির) গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর এমনকি এর কারণে বাচ্চার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এসময় পাস্তুরিত দুধ বা এর তৈরি দই খেতে পারেন।
ধূমপান ও মদ্যপান
গর্ভাবস্থায় ধূমপান এবং মদ্যপান অবশ্যই বর্জন করতে হবে। এটি বাচ্চার মস্তিস্ক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে।
ক্যাফেইন
ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় (চা, কফি, চকলেট) দিনে এককাপের বেশি না হলেই ভালো। উচ্চমাত্রায় ক্যাফেইন গ্রহণ করলে মায়ের ঘুম কম হতে পারে। এছাড়াও জন্মের সময় শিশুর ওজন কম হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় প্রতিটি দিন গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি কাজও তাই। মায়ের সঠিক যত্ন নিলেই একটি সুস্থ শিশু সে সবাইকে উপহার দিতে পারবে।