ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

দেহ একটা রঙের বাক্স

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
দেহ একটা রঙের বাক্স .

দেহ একটা রঙের বাক্সের মতো। দিব্যশক্তি শিশুর মতো এ দেহে রঙতুলি নিয়ে নানা ভাবে খেলা করতে থাকে। খেলার জন্য তার পছন্দের জায়গা ‘চক্র’। এক-একটি চক্র তার কাছে এক-একটি প্লে-গ্রাউন্ড। 

প্রতিটি চক্রের সাথে দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জড়িত। যখন যে চক্রে দিব্যশক্তি খেলা করে তখন সে চক্রের ওপর ভাল-মন্দ দুরকমের প্রভাব পড়ে। দিব্যশক্তির এই খেলায় এক পর্যায়ে সব মন্দ হয়ে ওঠে ভালো। এমনকি রোগ সারানোসহ বিভিন্ন মিরাকলও ঘটে।

আসুন, জানা যাক সেই অজানা চক্র বিষয়ে :

মূলাধার চক্র (Root/Ovaries/Taste)

মূলাধার চক্র দেহের মেরুদন্ডের শেষ প্রান্তে বা নিম্নাংশে অবস্থিত। এটিকে কুণ্ডলিনী বলে।

এ চক্রের চারটি দল। এর রঙ লাল। এটি আমাদের চেতনা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এ চক্রটি চেতন থেকে অবচেতন পর্যন্ত বিস্তৃত। জন্ম, মৃত্যু, জরা, ব্যাধি- এ চারটির নিয়ামক এ চক্র। কামশক্তির আধার এটি। এটিতে আছে অস্থিধাতুর শক্তি। এ চক্রে দিব্যশক্তি খেলা করলে কামনা বাড়ে। জন্ম হয়, হয় মৃত্যুও।  

স্বাধিষ্ঠান চক্র (Abdomen/Pancreas glands)

স্বাধিষ্ঠান চক্র দেহের তলপেট বা অগ্নাশয় নিয়ে গঠিত। এ চক্রের ছয়টি দল। এর রং গাঢ় গোলাপি। এটি আমাদের লোভ, কামনা, বাসনা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এটিতে আছে মেদ ধাতুর শক্তি। এ চক্রে দিব্যশক্তির নৃত্যে কামনা বাড়ে। বাসনা বাড়ে। লোভ বাড়ে। বমি হয়। ডায়ারিয়া হয়। ভয় কাজ করে।

 মণিপুর বা নাভিচক্র (Solar plexus/Adrenal glands)

মণিপুর চক্র দেহের নাভি বা বৃক্কাশয় বা পাকস্থলির নিচের শিরাজাল নিয়ে গঠিত। এ চক্রের দশটি দল। এটির রং বেগুনি। এটি আমাদের উচ্চ চেতনা, জীবনীশক্তি, আবেগ, বাসনা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এটিতে আছে মাংসধাতুর শক্তি। তেজশক্তির আধার এটি। এ চক্রে দিব্যশক্তি মণিপুরি নৃত্য করে। দিব্যশক্তির উন্মাদ নাচের তালে দেহের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। পেটের অসুখ হয়।

অনাহত বা হৃদচক্র (Heart/Thymus gland)

হৃদচক্র আমাদের বুকের মাঝখানে অবস্থিত। এ চক্রের বারটি দল। এর রং সোনালি-গোলাপি। এটি আমাদের আবেগ, রাগ-অনুরাগ, প্রেম, বিরহ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এটির অনেক গভীরে আত্মা থাকে। এটিতে আছে রক্ত ধাতুর শক্তি। বুক-পিঠ ব্যথা করে। হৃদরোগ হয়।

বিশুদ্ধ চক্র (Throat/Thyroid gland)

বিশুদ্ধ চক্র আমাদের কণ্ঠে অবস্থিত। এ চক্রের ষোলটি দল। এর রং ধূসর। এটি আমাদের ভাবপূর্ণ মন ও বাহির মনকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এ চক্র মানসিক শক্তি ও মনের সব ভাব প্রকাশ করে থাকে। এটিতে আছে স্নিগ্ধশক্তি। এ চক্রে শিশু খেলা করলে কথা বলার শক্তি আসে। গানের সুর আসে। সর্দি, কাশি, গলা-ঘাড় ব্যথা ও মন খারাপ হয়।

আজ্ঞা চক্র (Third Eye/Pineal gland)

আজ্ঞা চক্র আমাদের দু ভুরুর মাঝখানে অবস্থিত। এ চক্রের দুটি দল, রং সাদা। এটি আমাদের গতিময় মন, ইচ্ছা, দিব্যদৃষ্টি, মানসিক গঠন ও মনের সব চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এটিতে আছে মজ্জা ধাতুর শক্তি। এ চক্রে দিব্যশক্তির খেলায় মন কাজ করে। চিন্তাশক্তি, ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষমতা আসে। কবিতা, উপন্যাস লেখাসহ সব সৃষ্টিশীল কাজ করার ক্ষমতা আসে। মাথা ঘোরায়। কখনও কখনও মাথা চিন্তাশূন্য হয়ে পড়ে।

সহস্রার চক্র (Crown/Pituitary gland)

সহস্রার চক্র আমাদের মাথার ঠিক ওপরে অবস্থিত। এ চক্রের সহস্রটি দল। এটিতে নির্দিষ্ট কোনো রং নেই। এটি আমাদের উচ্চ চেতনা বা অধিচেতনা, অর্ন্তদৃষ্টি, বোধিসত্ব চেতনা, দিব্য চেতনা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এটির তিনটি অংশ আছে : সচ্চিদানন্দ (সৎ, চিৎ, আনন্দ), নিচ থেকে উপরে আনন্দ অংশ, এর উপরে চিৎ (দর্পণ) অংশ এবং  এরও ওপরে সৎ (মহাশূন্যতারুপী অন্ধকার) অংশ। মানুষ জাগতিক ও মহাজাগতিক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে। সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টিরহস্য সম্পর্কে জানতে পারে।  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।