তবে এ নিয়ে সরকারের কোনো নীতিমালা এখনও নেই! নীতিমালা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
এরমধ্যে স্যাম, পাঠাও উবার-সহ আরও ৬টি অ্যাপস মোটরসাইকেল সেবা দিতে দেখা যাচ্ছে।
স্মার্টফোনের অ্যাপস ‘উবার’ অন ডিমান্ড ট্যাক্সি কার সার্ভিস দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ঢাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভারতে তাদের মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং চালু আছে।
ঢাকায় পাঠাও- স্যাম এর মতো প্রায় একই ভাড়ায় উবারের একই অ্যাপসে মোটরসাইকেল সেবা মিলছে।
মঙ্গলবার ১৪ নভেম্বর শুরুর পর রাজধানী ঢাকাজুড়ে অনবরত রাইড শেয়ারিং হয়েছে উবারমটোতে। এমন একটি রাইড রিকোয়েস্ট করে বাংলানিউজের এ প্রতিবেদক দেখেছেন দ্রুত গন্তব্যে যাওয়ার চিত্র।
তবে মোটরসাইকে রাইড শেয়ারিংয়ের ভাড়া নিয়ে খসড়া নীতিমালায় এখন পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট ধারণা নেই। এ সুযোগে ভাড়া বাড়ছে। শুরুতে স্যাম-এর ভাড়া ছিলো সবচেয়ে কম। পরে পাঠাও এসে প্রায় বিশ ভাগ বাড়ায়। পরে প্রতিযোগিতায় স্যাম-পাঠাও প্রায় একই ভাড়ায় চলে আসে। সবশেষ আসা উবারমটো ভাড়া একটু বাড়িয়ে শুরু করেছে।
শুরুর সপ্তাহ উপলক্ষে উবারমটোতে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ৬০ টাকা, ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ১২০ টাকা, ১২ কিলোমিটার পর্যন্ত ১৮০ টাকা, ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ২৪০ টাকা ও ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত ৩০০ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যাবে।
তবে উবারমটোর নিয়মিত ভাড়া সম্পর্কে জানা গেছে , বেজ ফেয়ার ৩০টাকা। ট্রিপের সময় প্রতি মিনিট ১ টাকা। যেখানে পাঠাও ও স্যাম-এ ৫০ পয়সা। আর ট্রিপের দূরত্ব প্রতি কিলোমিটার ১২ টাকা। কিলোমিটারের ভাড়া পাঠাও, স্যাম ও উবারমটোতে একই। শুধু প্রতি মিনিটের ভাড়া ৫০ পয়সা বাড়তি উবারমটোতে।
রাইড শেয়ারিং ধারণা অনুযায়ী, নতুন কোনো অ্যাপস প্রতিষ্ঠান এলেই তাদের প্রয়োজন হয় বাইকার বা ড্রাইভারের। এজন্য বাইকার কাড়তে বাড়ানো হয় ভাড়া। আর রাইডার বা যারা এর ব্যবহারকারী তারা দেখেন কোনো অ্যাপস খুললেই দ্রুত বাইক পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে যারাই বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাইকার টানে তাদের দিকে রাইডার বা ব্যবহারকারীদের ঝুঁকতে হয়।
এভাবেই ঢাকায় একের পর বাইক রাইড শেয়ারিং অ্যাপ যাত্রা শুরু করছে। আর তার সঙ্গে ভাড়াও বাড়ছে। শুরুর দিকে বিভিন্ন প্রমোকোড দিয়ে থাকলেও এগুলো সীমিত সময়ের জন্য।
দেখা যাচ্ছে, সাড়ে ৪ লাখ মোটরসাইকেলের শহর ঢাকায় রাইড শেয়ারিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তীব্র যানজট ঠেলে মানুষ দ্রুত গন্তব্যে যেতে মোটরসাইকেল ব্যবহার করছে। আর মোটরসাইকেলে আরেকজন সঙ্গী নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে আয়ও হচ্ছে বাইকারদের।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরে উবার প্রথম মোটরাসাইকেল রাইড শেয়ার সেবা শুরু করে। পরের মাসে বেঙ্গালুরুতে চালু হয় এই সেবা। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংককে উবার ‘মোটরসাইকেল ট্যাক্সি সার্ভিস’ চালু করে। কিন্তু ভারত ছাড়া উবারমটো আর কোথাও ততটা জায়গা করে নিতে পারেনি।
ঢাকায় গত বছরের ২২ নভেম্বর চালু হয় আন্তর্জাতিক অন ডিমান্ড ট্যাক্সি সার্ভিস উবার। পরের মাস ডিসেম্বরে চালু হয় ‘পাঠাও’। দুই সপ্তাহ আগে কিছুটা বাড়তি ভাড়ায় ‘পাঠাও কারস’ নামে একই অ্যাপে ট্যাক্সি সার্ভিস চালু হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রথম মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং শুরু হয় ২০১৬ সালের ৭ মে। তখন ‘শেয়ার এ মোটরসাইকেল’ (স্যাম) মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং ধারণা নিয়ে আসে। কিন্তু শুরুতেই বিআরটিএ’র নিষেধাজ্ঞায় পড়ে তারা। এ অবস্থায় কার্যক্রম শিথিল রাখে ‘স্যাম’।
গত বছরের ডিসেম্বরে পাঠাও স্যাম-এর প্রায় ২০ শতাংশ বেশি ভাড়া নির্ধারণ করে মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং চালু করে। তাদের বাইকার বেশি থাকায় জনপ্রিয়তাও পায় তারা। মাসখানেক আগে থেকে স্যাম পাঠাও-এর সমান ভাড়া দিয়ে প্রতিযোগিতায় নামে। অফার আর বিভিন্ন সুবিধার কারণে ‘স্যাম-পাঠাও’ বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকি অ্যাপসগুলোর বাইক সবসময় মিলছে না। উবারমটো প্রথম দিনই পাওয়া যাচ্ছে সর্বত্র। এখন পর্যন্ত উবার ছাড়া বাকি সবগুলোই দেশীয় উদ্যোগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
এসএ/এসএইচ