প্রায় প্রতিটি দেশের মানুষের মধ্যেই আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যায়। এজন্য প্রতিটি দেশের সরকার এবং নানা বেসরকারি সংস্থা জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
আমরা করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)- এক জরিপে সম্প্রতি উঠে এসেছে এক ভয়াবহ তথ্য। কোভিডকালীন ১০ মাসে মহামারি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ও একই সময়ে আত্মহত্যায় ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এসব আত্মহত্যার পেছনে পারিবারিক অসন্তুষ্টিই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী। এরমধ্যে সাংসারিক মনমালিন্য, শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন আশঙ্কাজনকহারে প্রভাব ফেলে। এছাড়া বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ক্যারিয়ার ও অর্থনৈতিক অনিশ্চিয়তাও ভূমিকা রাখছে অবসাদগ্রস্ত হওয়ার।
অনেক সময় তাদের আবেগ, হতাশা অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে গিয়ে আত্মহত্যার মতো পথও বেছে নেওয়ার চিন্তা করে। মনোবিদদের মতে, একটা দিন খারাপ গেলে হতাশ হয়ে পড়াটাই অবসাদ নয়৷ এটা তার থেকে অনেক জটিল৷ ক্রমাগত মনের মধ্যে জমাট বাঁধতে থাকা হতাশা, দুঃখ, দৈনন্দিন জীবনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা, যা বেঁচে থাকাটাই কঠিন করে তোলে৷ অবসাদগ্রস্তদের মধ্যে সবসময় আত্মহত্যার প্রবণতা থাকে৷ আমাদের চারপাশে থাকা মানুষের দিকে একটু খেয়াল রাখলেই হয়তো এই ধরনের প্রবণতা কারো কারো মধ্যে চোখে পড়বে৷
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহিত কামাল বলেন, ‘আত্মহত্যার এই সামাজিক ব্যাধি শতভাগ নির্মূল করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। মানুষ হিসেবে নিজেকে জানতে হবে। সামাজিক দায়িত্ববোধ, পারিবারিক দায়িত্ববোধ, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসনগুলো যথার্থভাবে মেনে চললেই অনেকাংশে এটা রোধ করা সম্ভব। মানুষ হিসেবে কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, যদি উপলব্ধি করেন সমাজ কিংবা পরিবারের প্রতি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য, তবে তার পক্ষে আত্মহত্যা সম্ভব নয়। ’
আত্মহত্যা হুট করে হয় না। অনেক পরিকল্পনা করে এগোতে হয়। এ সময় আশপাশের মানুষ যদি একটু খেয়াল করে তাহলে তারা সমস্যাগুলো বুঝতে পারবে। আর অনেক জীবন রক্ষা পেতে পারে দুঃখজনক এই মৃত্যু থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১
এসআইএস