করোনাভাইরাসের কারণে শিশুদের স্কুল বন্ধ, বন্ধ বাইরে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করা। বড়দের মানসিক চাপের কিছু প্রভাব ছোটদের বন্দী জীবনেও পড়েছে।
সম্প্রতি ইউনিসেফ থেকে শিশুদের মানসিক চাপসহ নানা বিষয়ে জানানো হয়েছে একটি প্রতিবেদনে। সেখানে বিশেষজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী, সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের লেখক, মাসিক নিউ ইয়র্ক টাইমসের কলামিস্ট এবং দুই সন্তানের মা ডা. লিসা ডামুরের পরামর্শ তুলে ধরা হয়।
ডা. লিসা ডামুর পরামর্শ দিয়েছেন এই মহামারি করোনা চলাকালীন বাবা-মায়েরা কীভাবে তাদের সন্তানদের সহায়তা করতে পারেন-
ডা.ডামুর পরামর্শ দিয়ে বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগ এবং নিজেকে এর থেকে সুস্থ থাকতে শিশুরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে অভিভাবকদের অত্যন্ত শান্তভাবে কথাবার্তা বলা উচিত।
শিশুরা যে ভীত ও উদ্বিগ্ন বোধ করতে পারে প্রাপ্তবয়স্করা সে বিষয়টিকে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে তাদের কাছে তুলে ধরে সহানুভূতি প্রকাশ করতে পারে। বিশেষত শিশু ও অল্প বয়স্কদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ সংক্রমণজনিত অধিকাংশ উপসর্গই সাধারণত হালকা হয়। এ বিষয়ে আপনার সন্তানকে আশ্বস্ত করুন।
এটা মনে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ যে, কোভিড-১৯ রোগের অধিকাংশ লক্ষণই চিকিৎসাযোগ্য। সেখান থেকে, আমরা তাদের মনে করিয়ে দিতে পারি যে, নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত রাখতে এবং পরিস্থিতির ওপর আরও ভালো নিয়ন্ত্রণ রাখতে আমরা ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখ স্পর্শ না করা এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো অনেক কিছুই করতে পারি।
শিশু কিশোরদের জন্য একটা সময়সূচী বা রুটিন দরকার। সন্তানের জন্য দিনের একটি সময়সূচি আছে কিনা তা বাবা-মা নিশ্চিত করবেন। আর এ সময়সূচিতে সময়টা কীভাবে ব্যয় করা হবে তার পরিকল্পনা থাকবে। এসব বিষয়গুলোতে সন্তানদের সম্পৃক্ত করারও পরামর্শ দেন ডা. লিসা ডামুর।
স্কুল বন্ধ হওয়ায় বাতিল হওয়া স্কুলের নাটক, কনসার্ট, বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য বিভিন্ন কার্যক্রমের বাতিল হওয়ায় শিশুরা বেশ হতাশ। এক্ষেত্রে ডামুরের একটি পরামর্শ হচ্ছে শিশুদের দুঃখ পেতে দেওয়া উচিত।
করোনভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগ সম্পর্কে প্রচুর ভুল তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। আপনার সন্তান কী শুনেছে বা কোনটাকে তারা ইতিমধ্যে সত্য বলে মনে করেছে সেটাও লক্ষ্য করুন। বাইরে যেতে পারছে না বলে তার অনেকটা সময কাটছে অনলাইনে। সেখানে কোন সাইটে সে সময় কাটাচ্ছে এটা দেখার দায়িত্বও আপনার।
ডা. লিসা ডামুর বলেন, অবশ্যই বাবা-মায়েরা বেশ উদ্বিগ্ন থাকে এবং আমাদের সন্তানেরা আমাদের কাছ থেকে সংবেদনশীল ইঙ্গিত আশা করবে। মনে রাখতে হবে, শিশু কিশোররা তাদের নিজেদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত ধারণা পাবার জন্য তাদের বাবা-মায়েদের ওপর নির্ভর করে।
এই করোনাকালে শিশুদের মানসিক বিকাশ যেন বাঁধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে বাবা-মাকেই সচেষ্ট থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২১
এসআইএস