দেশের সাড়া জাগানো অপ্রয়োজনীয় ও ব্যবহৃত পণ্যের ভার্চ্যুয়াল হাট রিসাইকেল বিনের প্রথম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগারগাঁও প্রবীণ নিবাসে বসেছিল প্রাণের মেলা। ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত ‘বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ’ পরিচালিত ‘প্রবীণ নিবাসে’প্রবীণরা কয়েক ঘণ্টার জন্য তাদের পরিবারকে যেন কাছে পেয়েছিলেন।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ব্যতিক্রমী সব পদক্ষেপ, মানুষের প্রয়োজনে পাশে থাকা, দাতা-গ্রহীতা নয় সাধ্য অনুযায়ী বিনিময় প্রথার প্রচলন করে লাখো হৃদয়ে জায়গা করে নেয় রিসাইকেল বিন। সহযোগী মনোভাব নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ গ্রুপের বর্তমান সদস্য প্রায় ১২ লাখ।
রিসাইকেল বিনের জন্মবার্ষিকীতে 'আসুন মায়া ছড়াই' শিরোনামের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রিসাইকেল বিন এর এডমিন প্যানেল, বেশ কিছু সমাজসেবী, সেচ্ছাসেবক, সংবাদকর্মী, মিডিয়াকর্মী ও বেশ কয়েকজন আলোচিত ও পরিচিতমুখ।
দিনব্যাপী এ কার্যক্রমে ছিল নবীনদের পরিচিতি পর্ব ও আলোচনা সভা।
এছাড়া বরেণ্য সাইকিয়াট্রিস্ট এর মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন বিষয়ক কাউন্সিলিং, প্রবীণদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা, কেক কাটা, ক্রিয়া অনুষ্ঠান, পুরনো দিনের গান, বাউলগান এবং ম্যাজিক শো।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরা বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান এর সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল মান্নান তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে রিসাইকেল বিনকে শুভকামনা জানিয়ে বলেন, নবীন প্রবীণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এ ধরণের ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ আরও দরকার। বর্তমান সরকার প্রবীণদের কল্যাণে অনেক কিছু করেছে তবে যতদিন যুবসমাজের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় না হবে ততদিন বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়বে।
রিসাইকেল বিনের প্রতিষ্ঠাতা ও এডমিন ফ্লোরিডা শারমিন ও মাসুম আব্দুল্লাহ নবীনদের পক্ষ থেকে সমাজের প্রত্যেক স্তরে আবেগ-অনুভূতি-মায়া ছড়ানোর কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেয়ার অঙ্গীকার করেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ই-কুরিয়ারের সিইও বিপ্লব জি রাহুল ও বিভিন্ন বরেণ্য সব স্টার্টআপের সত্ত্বাধিকারীরা। প্রত্যেক নিবাসী প্রবীণের জন্য নকশিকাঁথা, রকমারি ফল, স্যানিটাইজার ও মাস্ক উপহার দেয়া হয় গ্ৰুপের পক্ষ থেকে। এছাড়াও ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা পান ক্যানভাস, তুলি ও ছবি আঁকার বিভিন্ন উপকরণ।
ম্যাজিক শো ও গানের আয়োজনে মন খুলে অংশ নেয় প্রবীণরা। উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দিতে গ্ৰুপটির এডমিন প্যানেলের সদস্যরা প্রত্যেক নারী নিবাসীকে হাতে মেহেদী পরিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়াও নিবাসী প্রবীণদের সময় কাটানোর জন্য কয়েক সেট দাবা ও লুডু খেলার বোর্ড, গরম পানি ও চা বানানোর জন্য ইলেকট্রিক কেটলি উপহার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠান শেষে প্রবীণ নিবাসি রামিসা খাতুন (ছদ্দনাম) বলেন, আমি এই প্রবীণ নিবাসে ৮ বছর ধরে আছি। আমাদের প্রত্যেকটি দিনই এক রকম বর্ণহীন। ছেলেমেয়েগুলোকে কাছে পেয়ে অনেকদিন পর প্রানখুলে হেসেছি, গেয়েছি এবং মেহেদী উৎসব করেছি। সাংকৃতিক অনুষ্ঠানের শেষ দিকে অনেক নিবাসী প্রবীণদেরকে অতিথিদের সঙ্গে নাচতে দেখা গেছে।
এসময় তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যেক প্রবীণ আয়োজকদের ধন্যবাদ দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২১
এনএইচআর