ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

লাইফস্টাইল

জামালপুরের বৈচিত্র্যময় খাবার ‘পিঠালি’

সাগর ফরাজী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২২
জামালপুরের বৈচিত্র্যময় খাবার ‘পিঠালি’

জামালপুর থেকে ফিরে: জামালপুরের ‘পিঠালি’। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ খাবারটি মেন্দা, মিল্লি অথবা মিলানি নামেও পরিচিত।

তবে জামালপুর জেলায় এ খাবারটির নাম শুধুই পিঠালি।  

এ অঞ্চলের মানুষ পিঠালি খেতে ভালোবাসেন। এক কথায় এ খাবার জামালপুরের ‘জাতীয় খাবার’ও বলা চলে।

কারণ ঝালে ভরা পিঠালি খেলেই শুধু বোঝা যাবে, কেনো এ পিঠালির নাম শুনলে জিহ্বায় পানি চলে আসে। স্বাদে অতুলনীয় জামালপুরের বৈচিত্র্যময় এ খাবার। পিঠালি দেখে তেমন ভালো না লাগতে পারে অনেকের। কিন্তু যে একবার এ খাবারটি খেয়েছে, তার জন্য খাবারটির স্বাদ ভোলা দায়। সারা বছর এ জেলার মানুষ পিঠালি খেলেও কোরবানির ঈদের সময়টায় বেশি পিঠালি রান্ন হয় জামালপুরে।

পিঠালি কিন্তু প্রতিদিনের খাবার নয়। এ অঞ্চলের মানুষ শুধু উৎসবে এ রান্নার আয়োজন করে থাকেন। এর মধ্যে বিয়ে, আকিকা, খাৎনাসহ কিছু কিছু উৎসবে খাবারটি খাওয়ানো হয়। এক সময় মাটির পাতিলে রান্না করে কলা পাতায় মোটা চালের গরম ভাতের সঙ্গে পিঠালি পরিবেশন করা হতো। কিন্তু এখন কালের বিবর্তনে পরিবেশনায় যুক্ত হয়েছে অধুনিক উপকরণ।

কবে থেকে এ খাবারের প্রচলন, তা জানেন না জামালপুরবাসীও। তবে বছরের পর বছর ধরে এ অঞ্চলের মানুষ উৎসবের খাবারের তালিকায় পিঠালিকে প্রথম সারিতে রেখেছেন। গ্রামের নারীরা খুব যত্ন করে পিঠালি রান্না করে থাকেন।

কি কি প্রয়োজন পিঠালি রান্না করতে:
গরু বা খাসির মাংস (তেল যুক্ত ও হাড় বেশি), আলা (পিঠা বানানোর চাল) চালের গুঁড়ো (অবশ্যই ভেজে নিতে হবে), রসুন বাটা, জিরা বাটা, আদা বাটা, পেঁয়াজ কুচি, হলুদ গুঁড়ো, মচিরে গুঁড়ো, ধনিয়ার গুঁড়ো, দারুচিনি, বড় এলাচ, বস (বাধ্যতামূলক), লবণ (স্বাদ মতো), সয়াবিন তেল ও পানি (পরিমাণমত)। সব উপকরণ মাংসের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে দিতে হবে।

যেভাবে রান্না করতে হবে:

প্রথমে আলা চাল নিতে হবে। সেটাকে ঢেকিতে অথবা মেশিনে গুঁড়ো করতে হবে। পরে চালের গুঁড়ো ভালো করে ভেজে নিতে হবে। এরপর মাংস ভালোভাবে ধুয়ে একটি পাত্রে নিয়ে সব মসলা দিয়ে ভালো করে মেখে (মেরিনেট) কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এরপর সেই মাংসে কিছুটা পানি দিয়ে চুলায় ১০ মিনিটের মত কষাতে হবে। মাংসে তেল ওঠার পর সেদ্ধ করার জন্য এতে পানি দিতে হবে। সেই সঙ্গে ভাজা চালের গুঁড়ো অল্প পানিতে গুলিয়ে মাংসের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। মাংস সেদ্ধ হলে আলাদা পাত্রে রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি, আধা চা চামচ আস্ত জিরা ভেজে তাতে দিতে হবে। এরপর আরেকটু নাড়াচাড়া করে চুলা থেকে নামিয়ে নিলেই রান্না হয়ে যাবে সুস্বাদু পিঠালি। পরিবেশনের সময় হালকা পেঁয়াজ ভাজি অথবা ধনিয়া পাতা ওপরে ছড়িয়ে দিলে আলাদা একটি স্বাদ পাওয়া যায়।  
ভাত, রুটি, পরাটা বা পোলাওয়ের সঙ্গে পিঠালি খাওয়ার মজাই আলাদা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২২
এসএফ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।