এক ক্যারেট হীরার দামের ৬৫ হাজার রুপি। এর চেয়েও ১৩শ গুণ বেশি অর্থ খরচ করতে হবে চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের ‘দ্য হং পাও’-এর কারখানায় তৈরি চা খেতে।
কী আছে এই চায়ে, কেন এত দাম? যারা এই বিষয়ে জানেন, তারা বলছেন, এটি আসলে জৈব চা। ফুজিয়ান প্রদেশের ইউয়ী পর্বতমালায় ‘দ্য হং পাও’ নামে একটি দুষ্প্রাপ্য গাছের পাতা দিয়ে এই চা তৈরি হয়। এর রয়েছে উচ্চ ওষুধগুণ। সেই সঙ্গে এই পাতা বেশ দুষ্প্রাপ্য। এর দুষ্প্রাপ্যতা আর ওষুধগুণের জন্যই এই চায়ের এত দাম।
ফ্লেভনইডস, টি পলিফেনলস, থিওফিলাইন ও ক্যাফেইন সব কিছুই এই চা পাতায় রয়েছে। এই চা পানে দূর হয় ক্লান্তি, বেড়ে যায় রক্ত সঞ্চালন। ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে যে শারীরিক ক্ষতি হয়, তার মাত্রা এই চা পানে কমে যায়। কারণ, রক্তে মিশ্রিত নিকোটিন ও অ্যালকোহলের মাত্রাকে এই চা কমিয়ে দিতে পারে।
‘দ্য হং পাও’ চায়ের আরও গুণ রয়েছে। তা হলো, এই চা ত্বক ভাল রাখতে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। সেই সঙ্গে সর্দিকাশি থেকেও মুক্ত রাখে।
তবে চায়ের বিশ্বখ্যাতি পাওয়ার পেছনের গল্পটাও বেশ আকর্ষণীয়। বেইজিংয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমন সময়ে তিয়ানজিন মঠের এক সন্ন্যাসী তাকে দেখতে পান। তিনি এক কাপ এই চা তৈরি করে ওই ছাত্রকে দেন। পরে শোনা যায় সে পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে।
কৃতজ্ঞতা হিসেবে মঠের ওই সন্ন্যাসীকে ধন্যবাদ দিতে আসে ওই ছাত্র। পরে ওই ছাত্র এই ‘দ্য হং পাও’ চায়ের মাধ্যমে অসুস্থ শাসককে সুস্থ করে তোলে। খুশি হয়ে শাসক তাকে একটি লাল পরিধেয় উপহার দেন এবং তাকে নির্দেশ দেন, সে যেন ওই চা-গাছে লাল পরিধেয়টি ঝুলিয়ে দেয়। সেই সময়ে লাল পরিধেয়কে খুব সম্মানের বলে মনে করা হত।
ক্ষমতাসীন শাসক অন্যদেরও লাল পরিধেয় ওই চা-গাছে রেখে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই কারণে ওই চা গাছের নাম তখন থেকে ‘বিগ রেড রোব’ হয়, চীনে যাকে বলা হয় ‘দ্য হং পাও’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
আরএইচ