লন্ডন: লন্ডনের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা, ব্রিকলেন জামে মসজিদ ট্রাস্টের সভাপতি, আতাউর রহমান চৌধুরীর নাগরিক শোকসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রথম ও সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী বলেছেন, আতাউর রহমান চৌধুরী ছিলেন কমিউনিটির একজন অভিভাবক।
সমাজের সবাই তার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন।
কমিউনিটির অগ্রযাত্রার গোড়াপত্তনেও অনেকের মধ্যে আতাউর রহমান চৌধুরীর ভূমিকা স্মরণ করার মতো। কমিউনিটির মানুষকে তিনি ছায়ার মতো আগলে রেখেছিলেন। যে কারো বিপদে তিনি হাত বাড়িয়েছেন।
রোববার পূর্বলন্ডনের আট্রিয়াম হলে নাগরিক শোকসভা কমিটি আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ রাজনীতিক সুলতান শরীফ।
কমিউনিটি নেতা সাজ্জাদ মিয়া ও শাহ শামীম আহমদের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় বিশিষ্ট সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম আতাউর রহমান চৌধুরীর ভাই শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেটের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরান, বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার খন্দকার তালহা, জিএলএ মেম্বার জন বিগস, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, বাংলা টিভির চেয়ারম্যান সৈয়দ সামাদুল হক, চ্যানেল আই ইউরোপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা শামসুদ্দিন খান, কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী, কাউন্সিলর সুলুক মিয়া, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কমিশনার আজাদুর রহমান আজাদ, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক মেয়র গোলাম মুর্তজা, কাউন্সিল অব মস্কের চেয়ার মওলানা শামসুল হক, কণ্ঠশিল্পী হিমাংশু গোস্বামী, কমিউনিটি নেতা মারুফ চৌধুরী, নঈম উদ্দিন, আকিকুর রহমান, হাজি আফতাব আলী, মুজিবুর রহমান, ইন্ডিয়ান মিয়া, হাফিজুর রহমান, তারিফ আহমদ, সৈয়দ ফখরুল ইসলাম, এম এ করিম, নূর উদ্দিন, আলতাফুর রহমান, আবদুর রহমান খালিসদার, আবদুল মন্নান, বিধান গোস্বামী, কয়েস চৌধুরী, শাহাবুদ্দিন চঞ্চল, ডা. আলাউদ্দিন, মুফজ্জিল খান, এম এ রউফ, হাজী আফতাব আলি, শায়েক আহমদ ও মল্লিক আব্দুল ওয়াদুদ প্রমুখও বক্তব্য রাখেন।
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, আতাউর রহমান চৌধুরী ছিলেন প্রবাসী বাঙালিদের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। ছিলেন একজন সমাজসেবক।
অমায়িক, বন্ধুবৎসল, পরোপকারী, হৃদয়বান মানুষ হিসেবে কমিউনিটির মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। প্রবাসী বাঙালিদের সুখ-দুঃখে তিনি সব সময় কাছে ছিলেন।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আতাউর রহমানের ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় তহবিল সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রবাসে বিশ্বজনমত গঠনেও কাজ করেছেন তিনি।
আতাউর রহমান চৌধুরীর পারিবারিক ঐহিত্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আতাউর রহমান চৌধুরী ছিলেন ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। তার বাবা আবদুল মতলিব চৌধুরী ও ভাই মতিউর রহমান চৌধুরী রাজনীতি ও সমাজসেবার যে ধারাবাহিকতা রেখে গেছেন, তিনি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই রাজনীতি, সমাজসেবা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চার ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। ব্রিকলেন মসজিদের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তার ভাই শফিক চৌধুরী বাংলাদেশে রাজনীতিবিদ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে ও প্রবাসে বাংলাদেশের মানুষের প্রতি বিশ্বস্ততা এবং প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই পরিবার যুগ যুগ ধরে কাজ করে যাচ্ছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর আমাদের স্বাধীনতার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আতাউর রহমান চৌধুরী প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে কাজ করেছেন। অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে, হাইড পার্ক কর্ণারের মিছিলসহ তিনি সবখানে ছিলেন। ব্রিকলেন মসজিদ ছিল তার ঠিকানা।
শোকসভার বক্তারা আতাউর রহমান চৌধুরীর নামে ব্রিকলেনের একটি রাস্তা অথবা একটি ভবনের নামকরণের দাবি জানান, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কাছে। সবশেষে ব্রিকলেইন জামে মসজিদের ইমাম মওলানা জিল্লুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৫
এবি