ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লন্ডন

রক্তের বিনিময়ে অর্জন

বাঙালি আলতাব আলীর নামে লন্ডনে দিবস ঘোষণা

সৈয়দ আনাস পাশা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
বাঙালি আলতাব আলীর নামে লন্ডনে দিবস ঘোষণা

লন্ডন: বর্ণবাদীদের হামলায় ১৯৭৮ সালে নিহত বাঙ্গালি আলতাব আলীর মৃত্যুদিনকে ‘আলতাব আলী ডে’ ঘোষণা করেছে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল।

পূর্ব লন্ডনের ‘আলতাব আলী পার্ক’ সবুজের সমারোহের জন্য সম্মানসূচক গ্রিন ফ্লাগ অর্জন করায় শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই গ্রিন ফ্লাগ উত্তোলনকালে টাওয়ার হ্যামলেটস-এর মেয়র জন বিগস ৪ মে ‘আলতাব আলী ডে’ ঘোষণা করেন।



মেয়র জানান, প্রতি বছর ওইদিন বঙ্গসন্তান আলতাব আলীকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণের মাধ্যমে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নতুন করে শপথ গ্রহণ করা হবে।

জন বিগস বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক শহীদ আলতাব আলীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তার নির্মম হত্যাকাণ্ড ভুলতে দেওয়া যায় না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রতীক আলতাব আলীকে আমরা বাঁচিয়ে রাখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজে সহিংস বর্ণবাদ কমে আসলেও নেপথ্যের বর্ণবাদ এখনও রয়ে গেছে। এর বির‍ুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। এই লড়াইয়ে আলতাব আলী নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

আলতাব আলী পার্ক একটি ঐতিহাসিক পার্ক। এই পার্কে বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্মারক শহীদ মিনারও রয়েছে। এমন একটি স্থান সম্মানজনক গ্রিন ফ্লাগ অর্জন করায় মেয়র হিসেবে আমি গর্বিত। আলতাব আলী পার্ক ছাড়াও টাওয়ার হ্যামলেটসের আরও ৮টি পার্ক এই সম্মানজনক গ্রিন ফ্লাগ অর্জন করেছে, এসব অর্জন স্থানীয় জনগণের, যোগ করেন মেয়র।

পূর্ব লন্ডনে বর্ণবাদীদের হামলায় ১৯৭৮ সালে নিহত হয়েছিলেন আলতাব আলী। বৃটেনের বর্ণবাদ বিরোধী সংগঠনগুলো আলতাব আলীর মৃত্যুদিন ৪ মে’কে ‘আলতাব আলী ডে’ হিসেবেই পালন করে আসছিল। এবার দিনটিকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ায় বাংলাটাউন, শহীদ মিনারের পর এটি বাঙালিদের আরেকটি অর্জন বলেই মনে করা হচ্ছে।

৭০’র দশকে বৃটেনে বর্ণবাদী হামলা চরম আকার ধারণ করে। পূর্ব লন্ডনের অ্যাডলার স্ট্রিটের পাশে তৎকালীন সেন্ট মেরিস পার্কে (বর্তমান নাম আলতাব আলী) আলতাব আলী প্রথম আক্রমণের শিকার হয়ে পাশের একটি বাস স্টপে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এ ঘটনার পরে স্থানীয় বাঙালিরা শোককে শক্তিতে পরিণত করলে সব বর্ণের সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে ওঠে বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে। আলতাব আলীর মরদেহ নিয়ে লন্ডনের রাজপথে মিছিল বের করে হাজার হাজার জনতা। মানুষের আবেগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে পরবর্তীতে স্থানীয় কাউন্সিল এই পার্কটির নামকরণ করে ‘আলতাব আলী পার্ক’। বর্ণবাদ বিরোধী ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এই এলাকায় কমতে থাকে বর্ণবাদী সহিংসতা, এক সময় এলাকাটি ব্রিটেনের বুকে একখণ্ড বাংলাদেশে পরিণত হয়।

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মোল্লাআতা গ্রামের আব্দুস সামাদ ও সোনাবান বিবির ৪ মেয়ে ও ৩ ছেলের মধ্যে বড় সন্তান ছিলেন আলতাব আলী। ১৯৬৯ সালে চাচার সঙ্গে বিলেতে পারি জমান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ