সোমবার (৮ এপ্রিল) জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও অ্যাস্তোনিয়া স্থায়ী মিশনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘দ্বীপ থেকে দ্বীপে- লুই আই কানের সৃজনশীল পদচারণা’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী।
স্থপতি ও ফটোগ্রাফার আর্নে ম্যাসিকের পরিকল্পনায় প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্রের পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে অ্যাস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের জগদ্বিখ্যাত স্থাপত্য সমূহের বিভিন্ন চিত্র।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অ্যাস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি মিজ কারস্টি কালজুলেইড, বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিজ মারিয়া ফার্নান্দে অ্যাস্পিনোসা গার্সেজ ও লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল কান।
উদ্বোধনী ভাষণে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান জাতীয় সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানকে স্মরণ করে বলেন, ভাবতে অবাক লাগে, অ্যাস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা একজন স্থপতি এতো দূরের একটি দেশে গিয়ে কিভাবে এমন অনুপম স্বাক্ষর রেখে গেলেন? নিশ্চিতভাবে এটি ছিলো তার হৃদয় সৃষ্ট একটি পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই উত্তর-দক্ষিণের বন্ধুত্বের এক অবিনাশী স্মারক। এ স্থাপত্য বাংলাদেশ ও অ্যাস্তোনিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছে অটুট বন্ধুত্বের বন্ধন।
জাতীয় সংসদ ভবন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংসদ ভবন এবং একটি স্থাপত্যের বিস্ময়। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় উপকরণ। যার নকশায় তুলে ধরা হয়েছে আবহমান বাঙালির স্থাপত্যধারা। যেখানে কৃত্রিম লেকের মাধ্যম দেখানো হয়েছে নদী-মাতৃক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেরা স্থাপত্য বিষয়ক সমালোচক ম্যাক ক্যার্টারের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ভবন বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থাপত্য ভাস্কর্য। এটি বিভিন্ন সভ্যতা ও যুগের স্থাপত্য কর্মের মেলবন্ধনের একটি অনন্য নিদর্শন হলেও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এ নকশার শিকড় গভীরভাবে প্রোথিত।
এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান।
তরুণ সংসদ সদস্য হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবনের প্রথম সংস্কার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ভবন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলো, যেমনটি ভেবেছিলেন কান। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি শুধু সংসদ ভবনই নয়, এটি স্থিতিশীলতা, মর্যাদা ও জাতির গর্বের প্রতীক।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংসদ ভবনকে লুই আই কানের অন্যতম সেরা সৃষ্টি মন্তব্য করে অ্যাস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি মিজ কারস্টি কালজুলেইড বলেন, কানের সৃষ্ট ভাস্কর্যসমূহ স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতীক, যার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে।
লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল কান তার বাবার স্থাপত্য কর্মের দর্শন ‘মানবীয় ঐকমত্য’র কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকের পৃথিবীতে এটি খুবই প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, অ্যাস্তোনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সিভেন জুরগেনসনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
আরবি/