মালয়েশিয়া: শফিক রেজা (ছদ্মনাম) দুই বছর ধরে মালয়েশিয়ায় কাজ করছেন দালান নির্মাণের। এসেছেন কুয়ালালামপুরের চোউকিট এলাকায়।
মোবাইল দোকানদার জিজ্ঞেস করেন ‘তোমার দেশ কোথায়?’। রেজা জানালেন, বাংলাদেশ। আচ্ছা, তোমার পাসপোর্ট টা দাও, এই মোবাইল সেট দেখতে হলে তোমার পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। আমরা বিদেশিদের কাছে মোবাইল দেখানোর আগে পাসপোর্ট জমা রাখি।
পাসপোর্ট বের করে দিলেন রেজা। এরপর দোকানদার তাকে মোবাইলটি দেখতে দেন। কিছুক্ষণ পর রেজা মোবাইলটি ফেরত দিয়ে বললেন, এটি তার পছন্দ নয়। সঙ্গে সঙ্গে দোকানদার দাবি করলেন, তার পাসপোর্ট ফেরত পেতে হলে তাকে মোবাইলটি কিনতে হবে। নিরুপায় হয়ে ৫০০ রিঙ্গিত দিয়ে (বাংলাদেশি টাকা ১২ হাজার ৫০০) শেষ পর্যন্ত তাকে মোবাইল কিনে ফিরতে হলো।
এভাবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন মালয়েশিয়ান এক অসৎ চক্র। আর এই ফাঁদে পা রেখে বাংলাদেশিরা হারাচ্ছেন তাদের কষ্টের উপার্জিত টাকা। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের চোউকিট ছাড়াও এ ঘটনা বেশি ঘটে, কোটারায়া , মাইডিন, মসজিদ ইন্ডিয়া, কাজাং, ব্রিকফিল্ড এলাকায়।
দোকানদাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া চালান। বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বাভাবিকতার সুযোগ নিয়ে এ কাণ্ড ঘটান তারা। শুধু মোবাইল কেন, ছোট ছোট দোকানগুলো অনেক বাহানা করে বিভিন্ন পণ্যের বিপরীতে টাকা হাতিয়ে নেয়। কখনো জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয় জিম্মি করে।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এসব অভিযোগ। শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ শ্রমিক প্রথমবার বাংলাদেশ থেকে এসে এসব সমস্যার সম্মুখীন হন।
তাই অনেকে উপদেশ দিলেন, মোবাইল কিনতে হলে কোনো ছোট খুচরা দোকান থেকে নয়, বড় রিটেইল শপ অথবা কোনো বাংলাদেশির দোকান থেকে কেনা ভালো।
এবার ঈদে প্রচুর বাংলাদেশি বিভিন্ন সামগ্রী কিনে বাংলাদেশে পাঠাবেন অথবা নিয়ে যাবেন। তাদের এ বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৪