ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি গার্মেন্টস

শ্রমিকের অভাবে ফাঁকা মেশিন

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৪
শ্রমিকের অভাবে ফাঁকা মেশিন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুয়ালালামপুর থেকে ফিরে: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী মো. মিনহাজ। কনস্ট্রাকশন, মেটাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্নিচার, হোটেল ছাড়াও রয়েছে গার্মেন্টস এবং বুটিক টেক্সটাইলের ব্যবসা।

ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ১০০ মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছেন নিজের এসব প্রতিষ্ঠানে। তবে দেশ থেকে শ্রমিক আনতে পারছেন না বলে খালি পড়ে আছে এখনো অনেক মেশিন এবং কর্মক্ষেত্র।

কুয়ালালামপুরে প্রীতি গার্মেন্টসে নিজ কার্যালয়ে কথা হয় মিনহাজের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজিকে বলেন, আমার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখনো ৪৫ থেকে ৬০ জন শ্রমিকের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে তবে শ্রমিক আনতে বাধা থাকায় স্থানীয় মালয় ও ভারতীয় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। কিন্তু ভিন্ন জাতির শ্রামকদের ওপর সব সময় বিশ্বাস করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিলে তারা আয় করতে পারতেন, সেই টাকাটা দেশে যেতো। এখন অন্য দেশের লোকদের টাকা দিতে হচ্ছে। অন্য যে কোনো দেশিদের তুলনায় আমাদের বাংলাদেশের লোকেরাও দক্ষও বেশি। মালয় বা ভারতীয়রা দিনে দু’টি কাপড়ের ডেলিভারি দিতে পারলে বাংলাদেশিরা পারেন ৪টি। অথচ এ দেশের স্বল্প দক্ষ লোকদের ২০০০ থেকে ২৮০০ রিঙ্গিত করে বেতন দিতে হচ্ছে। লোকবলের অভাবে দু’টি গার্মেন্টসে ৪০টি মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

মিনহাজ জানান, তিনি বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনতে ৩০টি ভিসা জমা দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সেগুলো এখনো প্রসেসিং হচ্ছে না দেশ থেকে।

তিনি বলেন, এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশ থেকে বৈধ প্রক্রিয়ায় লোক প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। তবে ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া বা ফিলিপাইন থেকে কিন্তু ঠিকই লোক আসছে। আবার বৈধ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় অবৈধ প্রক্রিয়ায় লোক কিন্তু ঠিকই আসছে। এ ধরনের লোক দিয়ে কাজ করতে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদেরও ঝামেলা।

মিনহাজ বলেন, আমাদের দেশে লোকের সংখ্যা বেশি, জায়গা কম। এখানে শ্রমের বাজার অনেক বড়। আর বাংলাদেশি শ্রমিকের চাহিদাও অনেক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ শ্রম বাজার ধরতে না পারায় সেটি এখন চলে যাচ্ছে ভারতীয়দের কাছে।

প্রীতি গার্মেন্টসে বর্তমানে ৪০ জন শ্রমিক কাজ করার মতো সুযোগ থাকলেও ২৫ জন কাজ করছেন।
এ গার্মেন্টসে মালয় পোশাক তৈরি করা হয়। গার্মেন্টসে ছেলেদের জুব্বা, সাম্পিং, মেয়েদের বাজু নুরং, স্কার্ফ ডুডংসহ প্রায় ৪০০ ধরনের কাপড়ের পণ্য তৈরি করা হয়। তৈরি পোশাক নিজের শো-রুমগুলোতেই বিক্রি হয়। এছাড়াও অন্যদের দোকানের অর্ডার নেন। শো-রুমেও লোকবলের অভাব রয়েছে বলে জানান মিনহাজ।

সম্প্রতি আলেস্তোতেও দোকান নিয়েছেন মিনহাজ। সেখানেও আরো বাংলাদেশি লোকের কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া প্রীতি হোটেলেও রয়েছে লোকবলের সংকট। সেখানে ২০ জনের প্রয়োজন হলেও রয়েছেন ৫ জন।

তিনি বলেন, প্রীতি ফ্যাশনের শো-রুম রয়েছে দু’টি। দুটোতে ৩০ জনের কাজ করার মতো সুযোগ থাকলেও করছেন ১৫ জন। এছাড়া প্রিমা ফ্যাশনেও রয়েছে শ্রমিকের কাজ করার সুযোগ।

মালয়েশিয়ার কেপং ক্যাফে এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন মিনহাজ। তিনি বলেন, ওই এলাকায় প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। সেখানকার মসজিদে বাংলাদেশ থেকে ইমাম, মুয়াজ্জিন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে মিনহাজের সরাসরি কনস্ট্রাকশন ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, লোকের অভাবে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করাচ্ছি এখন।

মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রবেশ করার অনুমোদন দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান মিনহাজ।

বাংলাদেশ সময়: ০১১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ