ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় জমজমাট স্টুডেন্ট এজেন্ট ব্যবসা

মাহমুদ খায়রুল, কুয়ালালামপুর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৪
মালয়েশিয়ায় জমজমাট স্টুডেন্ট এজেন্ট ব্যবসা

কুয়ালালামপুর (মালয়েশিয়া): একটা সময় ছিল যখন মালয়েশিয়ানরা পড়াশোনার জন্য পাড়ি জমাতো বাংলাদেশে। বেশি দিন নয়, ১৯৯০-৯৪ দিকের কথা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি তালিকায় সে সময় মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীদের নাম থাকতো নিয়মিত। কিন্তু বর্তমান চিত্রটা ভিন্ন। ভিন্ন বললেও ভুল হবে, বলা যায় মুদ্রার এ পিঠ- ওপিঠের মতো।
এখন বাংলাদেশে যান না মালয়েশিয়ান শিক্ষার্থীরা, উল্টে বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই স্টুডেন্ট ভিসায় শিক্ষার্থীরা আসছেন মালয়েশিয়ায়।

মালয়েশিয়ায় আসা এসব শিক্ষার্থীদের তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।

প্রথমটি হলো- যারা শুধু পড়াশোনা করতে আসেন। এরা উচ্চবিত্ত অথবা উচ্চ মধ্যবিত্তদের সন্তান, দ্বিতীয় শ্রেণীতে রয়েছেন পড়াশোনার পাশাপাশি যারা কাজ করতে ইচ্ছুক সেসব নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা এবং সবশেষ গ্রুপের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা হলো একটি এন্ট্রি টিকিটের মতো। এই শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা আদতে পুরো সময়টাই কাজে নিয়োজিত থেকে টাকা ‍আয় করেন।


মালয়েশিয়ায় প্রথম শ্রেণীর চেয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের চাহিদা বেশি। মূলত এদের ঘিরেই চলে ব্যবসা।

অনেক সত্যনিষ্ঠ ও সৎ এজেন্ট থাকলেও অসৎ এবং ধোঁকাবাজদের হাতে পড়বার সম্ভাবনাই বেশি। এখানে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া হয় মোটা অঙ্কের কমিশন। এ কমিশন ছাড়াও অনেকে অনেক বেশি চার্জ ধরে টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন।

এদের মধ্যে ব্যক্তিগত এজেন্টের সংখ্যা বেশি। এর মানে, যাদের কোনো রেজিস্ট্রেশন করা কোম্পানি নেই। নিজেই এককভাবে ব্যবসা করছেন। লিফলেট, ফেসবুক, টুইটারে বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার দিয়ে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীদের।

ডিপ্লোমা ও ব্যাচেলর লেভেলে যেখানে কাজ করার কোনো বৈধ সুযোগ নেই সেখানে গ্যারান্টি সহকারে কাজের সুযোগেরও কথা বলা হচ্ছে এসব বিজ্ঞাপনে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২শ’ জনেরও বেশি একক এজেন্ট রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এজেন্টের সাথে কথা হয় এ বিষয়ে।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এখন এমন একটা অবস্থা, আমরা শিক্ষার্থীরাই একেকজন এজেন্ট। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানে এজেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থী এলে তাদের খরচ কম ও লাভ বেশি হয়। এছাড়া, আমাদের একটা বাড়তি আয় হয়।
তিনি স্বীকার করেন, মাঝে মধ্যে অনেক মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার নাম করে শিক্ষার্থী আনা হয়।

তিনি বলেন, এখানে যারাই আসেন, তারাই কাজ করতে চান। এখন আমরা যদি বলি কাজ করা যাবে না, তাহলে কেউ আসতে রাজি হবে না।

এবার বাংলাদেশে এইচএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের একটা বড় সংখ্যা মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার জন্য আবেদন করেছেন। কেউ কেউ এখনো করছেন। ফেব্রুয়ারি সেশনে যোগ দেওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করছেন। আর এ মুহূর্তে এজেন্টদের ব্যবসাও রমরমা। জমকালো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকৃষ্ট করা হচ্ছে অনেককে।

বিভিন্ন প্যাকেজের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে অফার। থাকছে স্কলারশিপ ও কাজ করার নামে অনুমতির অফার যা সম্পূর্ণ ভুয়া এবং বানোয়াট।
তাই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন যেন কোনো প্রতারকের হাতে না ভেঙে যায় সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে আমাদেরই।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ