কুয়ালালামপুর: মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তেনাগানিতার সিনিয়র স্বেচ্ছাসেবক প্রোগ্রাম অফিসার আশিকুর রহমান।
এই তেনাগানিতা হল মালয়েশিয়ায় পুরস্কারপ্রাপ্ত এক বেসরকারি এনজিও যারা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে আসছে।
সম্প্রতি বাংলানিউজকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাতকারে অবৈধদের বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার পথও বাতলে দেন আশিকুর রহমান। আলোচনা করেন আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে।
তিনি বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ায় কাজ করতে পারবেন। কিন্তু যদি স্নাতক, ডিপ্লোমা এবং অন্যান্য সমমানের ডিগ্রি হয় তাহলে তারা পার্টটাইম, ফুলটাইম কোন কাজ করতে পারবেন না। এটি আইনত দণ্ডনীয়। তবে ইন্টার্নশীপ হলে আলাদা কথা।
আশিকুর বলেন, যেসব এজেন্ট চাকরির লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশিদের এদেশে নিয়ে আসছেন তারা প্রতারণা করছেন। ৬-১০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন, তিন বছরে কোর্স শেষ হবে-সবই মিথ্যা।
তবে কিছু হোটেল ম্যানেজমেন্ট এর কোর্স এমনভাবে গঠন করা হয়েছে যে আপনি এক বছর ক্লাস করবেন এবং বাকি দু’বছর হোটেলে কাজ করবেন। এটি তাদের পড়ালেখার অংশ হিসেবে বিবেচ্য হয়। কিছু পারিশ্রমিকও তাদের দেওয়া হয়।
কিন্তু এতে ইমিগ্রেশন অফিসারের হাতে পড়লে ভিসার অপব্যবহার আইনে গ্রেপ্তার করা হবে। এরপর নিশ্চিত জেল। জেলের মেয়াদ কতো দিন হবে তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর। সেটা তিন মাস থেকে ছয় মাস, আট মাস একবছরও হতে পারে। সঙ্গে দু’এক ঘা চাবুক আর তিন হাজার থেকে কুড়ি হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত জরিমানার আশঙ্কাও রয়েছে।
আর আপনি যদি অনথিভুক্ত হয়ে থাকেন তাহলে গ্রেপ্তারের পর ইনভেস্টিগেশন অফিসার নির্ধারণ করবেন আপনার অপরাধের কতটুকু- বলেন আশিকুর।
তিনি বলেন, এখন যদি কেউ যদি অবৈধ থাকেন তাদের জন্য উপদেশ হল, যারা অনথিভুক্ত আছেন তারা বাংলাদেশ চলে যান। কারণ নির্বাচন যতই এগিয়ে আসবে, ধরপাকড় ততই বাড়বে। প্রতি মাসেই বিশাল আকারের গ্রেপ্তার অভিযান হবে। তাই সময় থাকা পর্যন্ত আইনের হাতে সোপর্দ করা ভাল। কেউ গ্রেফতার হলে পাঁচ বছরের জন্য মালয়েশিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।
যারা জেলে আছেন তাদের জন্য কি করা যেতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বডি নম্বর নিয়ে একটা টিকিট কিনে দিতে হবে। যদি পাসপোর্ট থাকে তাহলে পাসপোর্টের ফটোকপি এবং যাদের পাসপোর্ট নেই তাদের বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস জোগাড় করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার সাধারণত জেলবন্দিদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, যারা এখনও জেলে আছেন, যাদের এখনও আইনি প্রক্রিয়া চলছে তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব সব প্রমাণ দিতে হবে। যদি কোন দালালকে টাকা দিয়ে থাকেন তাহলে, সেই রশিদ বা প্রমাণ, যদি কোথাও কাজ নিয়ে থাকেন তাহলে কোন স্বাক্ষর করা প্রমাণ ইত্যাদি দেওয়ার অনুরোধ জানান আশিক।
তিনি বলেন, যারা টুরিস্ট ভিসায় এসেছেন এবং অবৈধভাবে আছেন তারা এ বছরের মধ্যে ৪০০-৫০০ রিঙ্গিত জরিমানায় এমনেস্টি প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারবেন। পেনাং ইমিগ্রেশনে এই প্রোগ্রাম এখনও চালু আছে। এছাড়া জালান দুতার ইমিগ্রেশন অফিসেও এ তথ্য পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, র্মাচ ৩০, ২০১৫