কুয়ালালামপুর: দেশ থেকে হাজার কিলোমিটার দূরে বসবাসরত মানুষের খেতে ইচ্ছে করে দেশীয় খাবার। কিন্তু সবসময় সম্ভব হয় না, বরং কিছুটা দুস্কর সত্যিকারের বাঙালি স্বাদের খাবার পাওয়া।
বর্তমানে বেশ জমজমাট রেস্টুরেন্ট এই আযনূরা। জালান চানকাতে অন্য যে কোন দেশীয় রেস্টুরেন্টের তুলনায় এটি বেশ ফিটফাট। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পর্যটকরা এখানে এসে পান খাঁটি বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ।
দুই বাংলাদেশি তরুণ মহসীন করিম বাদল ও নূর মোহাম্মদের যৌথ উদ্যেগে ২০১৪ সালের ২৩ মে যাত্রা শুরু করে আযনূরা।
বাদল জানান, আযনূরায় বাংলাদেশি খাবারই মূখ্য। আর গ্রাহকদের চাহিদাও বাংলাদেশি খাবারে বেশি। ভিনদেশিরাও এসে বাংলাদেশি খাবার খোঁজেন। কারণ পর্যটকদের মধ্যে বিভিন্ন দেশীয় খাবারের স্বাদ নেয়ার আগ্রহ থাকে। আমরা সেটা পূরণের চেষ্টা করি।
নূর মোহাম্মদ বলেন, গ্রাহকদের মানসম্মত ও দেশীয় খাবারের সত্যিকারের স্বাদ দেয়ার জন্যে ঢাকা থেকে অভিজ্ঞ বাবুর্চি নিয়ে আসা হয়েছে আযনূরাতে।
পর্যটক এলাকা বুকিত বিনতাংয়ে ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে এই রেস্টুরেন্ট। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের পর্যটক আযনূরাতে পাবেন বাংলাদেশের তেহারী, খিচুড়ি, কালাভুনার স্বাদ। তবে চাপাতি, পরোটার পাশাপাশি এখানে নান রুটি আর আর মাংসটাই বেশি চলে বলে জানান বাদল।
দেশি সব মাছই পাওয়া যায় আযনূরায়। ইলিশ, রুই, কই থেকে শুরু করে বাইন মাছও রয়েছে। ভোজন রসিকদের জন্য আরো রয়েছে হরেক রকমের ভর্তার পদও।
আলু ভর্তা তো রয়েছেই-সঙ্গে বেগুন, বরবটি, শুটকি, পুঁই শাক, কচুর ভর্তাও পাওয়া যাবে। আর বাংলাদেশি মৌসুমী সবজির ভর্তাতো হয়ই।
বর্তমানে রেস্টুরেন্টটিতে সব মিলিয়ে দেশি-বিদেশি ১৭ জন কর্মচারী কাজ করছেন। রান্নায় যে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন মালিকরা তা বোঝানোর জন্যেই বললেন, শুধু রান্না ঘরেই কাজ করছেন ১০ জন।
মালয়েশিয়ায় যে কোনো রেস্টুরেন্টে ধুমপানটা খুব স্বাভাবিক। তবে সব ধরনের গ্রাহকের জন্যে উপযুক্ত করতে ধূমপান মুক্ত জায়গাও রাখা হয়েছে আযনূরাতে। রেস্টুরেন্টের প্রথম ভাগ ধুমপায়ীদের জন্যে। আর ভেতরে কাচ ঘেরা রুমটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
নূর মোহাম্মদ বলেন, আমরা মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি খাবারের মান বোঝাতে চাই। বাংলাদেশি সংস্কৃতির অন্যতম অংশ খাবার। আর সেই খাবার বাংলাদেশিদের পরিচয় করিয়ে দেয় পুরো বিশ্বে।
তিনি বলেন, যেহেতু আগেও রেস্টুরেন্টে কাজ করেছি, তাই নিজেরাও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করারই সিদ্ধান্ত নিই। এখানে বাংলাদেশকেই পরিচিত করে তোলার চেষ্টা করেন দু'বন্ধু।
তারা বলেন, এখানে মানুষ খেতে আসে। দেশের মানুষদের মধ্যে একাত্মতা তৈরি হয়। এটা খাওয়া ছাড়াও বেশি পাওয়া। অনেক সময় প্রবাসী বাংলাদেশিরা খেলে তাদের জন্যে আমরা কিছু ছাড় দেই। দেশের মানুষকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
কুয়ালালামপুরের অন্যান্য খাবারের দোকানের তুলনায় এখানে দামটাও একটু হাতের নাগালে। সবসময় কিছু আনকমন আইটেম রাখার চেষ্টা করি, বলেন বাদল।
শুধু রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া নয়। পার্সেলও নেয়া যেতে পারে এখান থেকে। দেড় থেকে ২ হাজার লোকের অর্ডার নেয়ার প্রস্তুতি সবসময়ই থাকে রেস্টুরেন্টটির।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৫
জেডএম/