ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের একই ভুলের মাশুল বারবার

মাহমুদ খায়রুল, কুয়ালালামপুর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৫
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের একই ভুলের মাশুল বারবার

ঢাকা: মালয়েশিয়ার ১৩টি প্রদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে বাংলাদেশিরা। ছড়িয়ে আছে না বলে বলতে হয়, মালয়েশিয়াকে গঠনেই এসব প্রদেশে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ।

কুয়ালালামপুরের টুইন টাওয়ার, পেনাংয়ের বাতুফিরিঙ্গি সৈকত, তেরেঙ্গানুর মসজিদ, মেলাকার মালয় রেস্তোরাঁ, পাহাঙ্গের চা বাগান, পেরাকের রাবার বাগান, লংকাউই দ্বীপ- কোথায় নেই বাংলাদেশিরা। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় বসবাস করলেও তাদের ঘামের-পরিশ্রমের সুফল বেশ ভালোভাবেই নিচ্ছে ভারত মহাসাগর বুকের দেশটি।

এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ মালয়েশিয়ায় এসে আবার কেউ ফেরত গেছে- এমন ঘটনা বিরল। বাংলাদেশিরাও খুব কম সময়েই মালয় ভাষা ও সংস্কৃতি আয়ত্ব করে এখানে দিনাতিপাত করছেন, গড়ছেন দেশের অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ।

এতোসব ভালো খবরের মধ্যেও মাঝেমধ্যে কিছু খবর পীড়া দেয় বাংলাদেশিদের। সেখানে অবস্থানের কাগজপত্রের ব্যাপারে অসতর্কতা অথবা খানিক ভুল কিছু লোককে হয়রানি এমনকি শাস্তির মুখেও ফেলে দেয়। আবার কতিপয় অসাধু চক্রের অসৎ কর্মের কারণে পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটিকেই অস্বস্তির মুখে পড়তে হয়। সচেতন মহলের মতে, একই ভুল বারবার করার পরও সচেতনতা না আসায় বাংলাদেশিদের এ অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে বারবার পড়তে হয়।

স্থানীয় মহলে প্রচলিত আছে, অসাধু চক্রের অসৎ কর্মের ফলশ্রুতিতে সামগ্রিকভাবে হয়রানির শিকার হওয়া অনেক বাংলাদেশিকে এটিএম বুথ হিসেবেও বিবেচনা করে মালয়েশিয়ান পুলিশ। তারা খুব সহজেই বাংলাদেশিদের ভুলে মাশুল হিসেবে জরিমানা স্বরূপ বিরাট অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। এমনও অভিযোগ আছে, বাংলাদেশিদের বন্দি রেখে তাদের স্বদেশ থেকে অর্থ এনে তারপর মুক্তি দেয় স্থানীয় পুলিশ।

এজন্য দায়টা বেশি কাদের? বলা যায়, শ্রমিক আইন এবং সাধারণ নিয়ম-কানুনের অজ্ঞতার জন্যই এভাবে ভুগতে হচ্ছে বেশিরভাগ বাংলাদেশিদের। কারও কারও অসদুপায় অবলম্বনের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ে যেতে হয় অনেককে।

সচেতন মহলের মতে, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন নেপালি, ইন্দোনেশিয়ান, ফিলিপিনো, থাই জরুরি বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন রাখতে প্রচারণা চালায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি বিভিন্ন গঠনমূলক অনুষ্ঠান ও বিদেশের মাটিতে অবস্থানকালে দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে ওইসব দেশের নাগরিকদের সচেতন করা হয়।

কিন্তু বাংলাদেশিরা এ ধরনের সচেতন বার্তাই পান না। অবশ্য, সচেতনতা বৃদ্ধিতে কোনো সংগঠন না থাকলেও মালয়েশিয়া বাংলাদেশিদের রয়েছে সর্বাধিক রাজনৈতিক সংগঠন!

বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর দিক থেকে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশিদের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু তাদের সেই ভূমিকার গুরুত্বটা কথ্যই থেকে যাচ্ছে। ছোট ছোট ভুলের জন্য তাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হলেও সেসব ভুল শোধরানোর কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে।

মালয়েশিয়ার সচেতন প্রবাসীরা মনে করেন, সচেতনতামূলক প্রচারণা ও স্বদেশিদের মধ্যে পরোপকারের মানসিকতাই এই বারংবার ভুলের বৃত্ত থেকে বের করে আনতে পারে বাংলাদেশিদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৫
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ