মালয়েশিয়া: প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রত্যেকে দেশের দূত হিসেবে বিদেশের মাটিতে কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. ইস্রাফিল আলম এমপি।
রোববার (৩ মে) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের মতিয়ারা কমপ্লেক্সে স্থানীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইস্রাফিল আলম বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে এমন ভালো সরকার আর কখনই ছিল না। জনসাধারণের কল্যাণে এমনভাবে নিবেদিত সরকার খুব কমই দেখেছেন বাংলাদেশিরা। জনগণকে দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আমাদের সরকার সবসময় সোচ্চার রয়েছে। আমি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বলতে পারি যে, ১৫ বছর আগে যে বাংলাদেশ দেখেছেন, এখন আর সে বাংলাদেশ নেই। এখন অন্যমাত্রার একটি বাংলাদেশ দেখতে পাবেন।
তিনি বলেন, এখন আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিসর বিশাল। দেশ এখন অনেক এগিয়ে চলেছে। প্রবাসে আপনাদের বীরোচিত ভালো কাজের মাধ্যমে দেশের সুনাম বয়ে আসবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, প্রবাসীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখতে অবদান রেখে চলেছেন। এ কারণে এখন বাংলাদেশের রিজার্ভও ভালো। রিজার্ভ যখন বাড়ে তখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে বহির্বিশ্বের ব্যবসায়ীদের বিশ্বাসও বাড়ে। এসব কারণে আমরা প্রবাসীদের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমরা তাদের ভালো চাই, মঙ্গল চাই। এখানে যাদের অব্যবহৃত টাকা রয়েছে, সেগুলো যদি বাংলাদেশের ব্যাংকে রাখেন, তাহলে সেটিও এক ধরনের বিনিয়োগ হবে। বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে অনেক ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাদের কল্যাণে কাজ করছেন।
ইস্রাফিল আলম বলেন, বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রবাসে তুলে ধরে বিদেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টিতে প্রবাসীরা ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে এক রোল মডেল এবং বাংলাদেশি পণ্য একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মালয়েশিয়া শ্রমিক লীগের আহবায়ক সোহেল বিন রানার সভাপতিত্বে ও সাহাদাত হোসেন সাব্বিরের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলার (লেবার) মো. সায়েদুল ইসলাম মুকুল।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে। যাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে আমাদের অর্থনীতির চাকা ঘোরে।
তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশিরা ভালো কাজ করুক। ভালো যে কোনো কাজে আমরা আছি, থাকবো। প্রবাসে আমাদের ভাবমূর্তি বাড়াতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
প্রবাসীদের উদ্দেশে সায়েদুল ইসলাম মুকুল বলেন, আমাদের কর্মকাণ্ডেই বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের সম্মান বাড়বে। খারাপ দিক ভুলে গিয়ে ভালো দিক বলার অভ্যাস করতে হবে। মালয়েশিয়া আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। আমাদের প্রতি তাদের আন্তরিকতা রয়েছে। আমাদের শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে হাইকমিশনার এম শহিদুল ইসলাম মালয়েশিয়া সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। শিগগির সমাধানের চেষ্টা করছেন।
তিনি বর্তমান সরকারের প্রসংশা করে বলেন, শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে রূপ লাভ করবে।
এসময় তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে কথা বলেন। সায়েদুল ইসলাম মুকুল সবাইকে আগামী নভেম্বরের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি মালয়েশিয়ার বাংলাদেশি শ্রমিকদের সব সমস্যা নিরসনে কাজ করে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এম রেজাউল করিম রেজা, যুগ্ম-আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামাল, আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান শওকত, আব্দুল বাতেন, নুর মোহাম্মদ ভূইয়া, মালয়েশিয়া যুব লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মনছুর আল বাশার সোহেল, বিজন মজুমদার, মালয়েশিয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বিএম বাবুল হাসান, তারিকুল ইসলাম মিতুল, শ্রমিক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক নাজমুল হাসান বাবুল, শাহ আলম হাওলাদার, জাকির হোসেন, আতিকুর রহমান জীবন, মো. মইন উদ্দিন, কাজাং শাখা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান, ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওয়াসিম ওয়াজেদ প্রমূখ। সভায় আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ এর সহযোগী সংগঠনগুলোর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৩ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৫
এমএন/এইচএ