ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মানবপাচার ট্রাজেডি: প্রতারিত থেকে প্রতারক

মাহমুদ খায়রুল, কুয়ালালামপুর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
মানবপাচার ট্রাজেডি: প্রতারিত থেকে প্রতারক ছবি: (ফাইল ফটো)

কুয়ালালামপুর: পূর্ব এশিয়ার মানবপাচারের স্বর্গ রাজ্য এখন মালয়েশিয়া। একের পর এক বাংলাদেশি এবং মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশীয় সীমান্তে জিম্মি করে কয়েক দিনেই কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে একদল মানুষ।

প্রভাবশালী মহল থেকে শুরু করে আইনরক্ষাকারী বাহিনীর এই সিন্ডিকেটের বেড়াজালে পড়ে জীবন বাজি রেখে সর্বস্ব হারাচ্ছেন ভাগ্যাণ্বেষীরা। কখনোবা মারা পড়ছেন বেঘোরে।

মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতা 
মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার পর স্বল্প আয়ের মানুষের প্রধান টার্গেট হয়ে ওঠে মালয়েশিয়া।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যেসব বাংলাদেশি শ্রমিক আগে দুবাই, কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরবে কাজ করতেন, তারা মালয়েশিয়া আসার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে শুরু করেন। আর যারা আগে মালয়েশিয়ায় এসেছেন তারাও তাদের প্রতিবেশী আর স্বজনদের উৎসাহ দিচ্ছেন মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানোর।

মাত্র ৪০ হাজারে মালয়েশিয়া
দালালরা মাত্র ৪০ হাজার টাকায় মালয়েশিয়ায় পৌছে দিয়ে মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয়ের লোভ দেখায়। আর এই ফাঁদে একবার পড়লেই শেষ পর্যায়ে ২ থেকে আড়াই লক্ষ টাকায় ছাড় মেলে। প্রথমে ৪০ হাজার টাকা জমা রাখলেও পরবর্তীতে তাদের আটকে রেখে এ মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

প্রতারিত থেকে প্রতারক
যারা এই দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়, পরিশেষে তারাই তাদের এলাকার মানুষদের আবার ফাঁদে ফেলার সুযোগ নেয়। কারণ প্রতিটি মানুষের কাছ থেকেই একটি বড় অঙ্কের অর্থ নেওয়া হয়। স্থায়ী দালালরা তাদের বলে যে, মাত্র ১০- ১৫ জনকে বাংলাদেশ থেকে আনতে পারলেই তারা কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতে পারবে। এই লোভের ফাঁদে প্রতারিতরাই হয়ে উঠে প্রতারক।

অঞ্চলভিত্তিক দালাল সংঘ
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় প্রতি গ্রামে নিয়োগ দেওয়া আছে দালালচক্রের কর্মীদের। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, ফেনী, নোয়াখালী, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, কক্সবাজার ছাড়াও বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন গ্রামে এজেন্টের মত এসব সংঘ কাজ করে থাকে। প্রতি বাংলাদেশিকে নৌকায় উঠাতে পারলেই ৪০-৫০ হাজার টাকা করে পায় তারা।

দুর্বল আইন
মালয়েশিয়ার পুলিশ অনেকবার দুর্নীতির জন্য সমালোচিত হয়েছে। একটি বড় মাপের দুর্নীতি সিন্ডিকেট কাজ করে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশের হাত ধরে। পাচারের শিকার হওয়া কাউকে ধরলেও অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেবার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

পুলিশ দাবি করেছে, গত মার্চ মাস থেকে প্রায় ৩৮ জনকে মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৬ জন মালয়েশিয়ান। তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ