মালয়েশিয়া থেকে: মালয়েশিয়ার কোতারায়া। রোববার এলেই যেন বেশি ব্যস্ত হয়ে ওঠে এ এলাকা।
রেস্টুরেন্ট, বাস স্টপেজ, ফুটপাত, মিনিমার্ট বা স্টেশনারি দোকান, সবখানেই খেটে খাওয়া মানুষের ভীড়। তবে এদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যাই বেশি চোখে পড়ে। আর এ কারণেই কোতারায়া এখানকার বাঙালিদের কাছে ‘বাংলা মার্কেট’ নামেই বেশি পরিচিত।
কোতারায়ার রাস্তাগুলোতে ঘুরলে জোর শব্দে শোনা যাবে বাংলাদেশি গান। এখানকার খাবারের দোকানগুলোতেও শোনা যাবে বাংলাদেশিদের হাঁকডাকের আওয়াজ। 'বাংলা খাবার' ডাক দিয়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে চাচ্ছে তারা।
এখানকার মোবাইল কোম্পানিগুলো শনি ও রোববার এই বিশেষ দু’টি দিনের জন্য আলাদা প্রচারণায় নামে বাংলাদেশি গ্রাহকদের টার্গেট করে। আর এজন্য সেলস ক্যাম্পেইনার হিসেবেও থাকে বাংলাদেশি ছেলেরা।
মেদান পাসারের খোলা চত্বরে কয়েকশত মানুষের ভীড়। এখানে রয়েছে ৬টি রেমিটেন্স হাউজ। মাসের প্রথমে বাড়িতে টাকা পাঠাতে সেগুলোতে রয়েছে শ্রমিকদের ভীড়।
অনেকেই এসেছেন কুয়ালালামপুরের বাইরে থেকে শুধু মাত্র টাকা পাঠাতে অথবা পরিচিতজনদের সঙ্গে দেখা করতে।
ক্লাং লামার নির্মাণ শ্রমিক রাশিদুল। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে। সপ্তাহে শুধু রোববারই ছুটি মিলে তার।
তিনি বলেন, মুক্তারপুরের আরো কয়েকজন মালয়েশিয়ার বিভিন্ন স্থানে থাকেন। শনি বা রোববার এখানে এলে অনেকের সঙ্গেই দেখা মিলে। কেউ বাড়ি থেকে কেউ ঘুরে এলে খোঁজ খবর পাওয়া যায়।
বিফসি রেমিটেন্স হাউসের মার্কেটিং বিভাগের কর্মকর্তা এস কে ফয়েজ আহমেদ বলেন, শনি ও রোববার দেশে টাকা পাঠানোর জন্য বেশি ভীড় থাকে। আর মাসের প্রথম সপ্তাহ হওয়াতে ভীড়টা বেশি দেখা যাচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষের ভীড় হয় এখানে। অপরিচিত হলেও 'দেশি ভাই' সম্বোধন সবাইকে কাছে টেনে নেয়।
মালয়েশিয়ায় অন্যান্য জায়গার তুলনায় কোতারায়া কিছুটা অপরিষ্কার। এখানে দোকানগুলোতে চিকা মারা থাকে বাংলা ভাষায়। বাংলা ভাষায় দোকানগুলোতে বিভিন্ন সেবার কথাও উল্লেখ রয়েছে। ভিনদেশিরাও বাংলা ভাষায় চালাচ্ছে পণ্যের প্রচারণা!
জালান সিলানে বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্টে ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হলো। দেশিদের ভীড়ে খাবারে টেবিল পাওয়া দুষ্কর। আর এদিন আড্ডার সময়ও বেশি কাটে দেশিদের। কুয়ালালামপুরের বাইরে থেকে আসা প্রবাসীরা দেশি স্বাদের খাবার খেতে কোতারায়ার রেস্টুরেন্ট গুলোতে হুমড়ি খাচ্ছে।
রাজধানী, রাঁধুনি, হোটেল চেরিস, ঘরোয়া, খাবার খাব, কুটুমবাড়িসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে আজ দেশিদের ভিড় আর আড্ডায় সরগরম। ব্যস্ত দোকানিদের সঙ্গে কথা বলা দুষ্কর।
শনি ও রোববারে কোতারায়ায় বাংলাদেশিদের এ ভীড় দেখতে আসেন অনেক পর্যটকরাও। পশ্চিমের এসব পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশিদের এই মিলনমেলা আর ভীড় ফ্রেমে বন্দি করে রাখার মতোই। বেলা গড়ানোর সঙ্গে কোতারায়ায় ভীড় বাড়ে প্রবাসীদের।
স্থানীয় মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মিলনমেলা দেখতে হলে কোতারায়াতে আসতেই হয় পর্যটকদের।
মালয়েশিয়ায় আসা যাওয়া: সপ্তাহে এখন ৬ দিনই রিজেন্ট এয়ারলাইনসের যাতায়াত রয়েছে ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে। সবচেয়ে কম খরচে বিলাসবহুল ভ্রমণের জন্য রিজেন্টকেই বেছে নেওয়া যায়।
রিজেন্টে কুয়ালালামপুর যাতায়াতের তথ্য জানতে ভিজিট করুন www.flyregent.com ঠিকানায়।
কুয়ালালামপুরে ঠিকানা: পুডু সেন্ট্রালে বাংলাদেশি মালিকানায় মার্ক হোটেলে পর্যটকরা পাবেন থ্রিস্টার হোটেলের সুবিধা। এখান থেকে কোতারায়া, চায়না টাউন, বুকিত বিনতাং সবকিছুই হাটা দূরত্বে।
মালয়েশিয়ায় থাকতে এবং ভ্রমণের সহায়তা নিতে ভিজিট করুন www.themarquehotels.com ঠিকানায়।
বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৫
এসএইচ