মালয়েশিয়া: মালয়েশিয়ায় কয়েক বছর ধরে একের পর এক প্লেন দুর্ঘটনায় অর্থনীতির বেশ ধস নেমেছে। মানুষের মনে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
২০১৪ সালের ৮ মার্চ উধাও হয়ে গিয়েছিল মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স’র অভিশপ্ত এমএইচ-৩৭০ নামের একটি প্লেন। আজ পর্যন্ত যেটির কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। এর তিন মাস পর ১৭ জুলাই দেশটির এয়ারলাইন্সের আরও একটি প্লেন এমএইচ-১৭ ইউক্রেনের ডনেস্কে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে ভূপাতিত করেছিল জঙ্গিরা। এখন প্লেনে মালয়েশিয়া আসা মানেই যেন একটা আতঙ্ক চেপে বসা।
আইফা অ্যাওয়ার্ড-২০১৫’র রাজধানীর কুয়ালালামপুরে নেমে বলিউড তারকা দেখেছেন প্লেন বিপর্যয়ের পরও মালয়েশিয়াবাসীর সংগ্রামী জীবনের চিত্র। তাদের জন্যই ’অ্যা ইয়ার অব সেলিব্রেশনস’র মোড়কে এবারের আইফা অ্যাওয়ার্ড মালয়েশিয়ায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে দেশটির সরকার।
এ বছর অন্য কোনো দেশে হওয়ার কথা ছিল বলিউডের এই হাইভোল্টেজ আন্তর্জাতিক তারকা সম্মেলন। কিন্তু মালয়েশিয়ার পর্যটন দফতর আইফা কর্তাদের অনুরোধ করে অনুষ্ঠানটি তাদের দেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। উদ্দ্যেশ একটাই-যাতে দেশের মানুষকে বিনোদনের মাধ্যমে একটু হলেও দুঃখকে ভুলিয়ে রাখা যায়।
সেই কারণেই প্রথম দিনের সংবাদ সম্মেলনে আইফা’র মেন্টর অনিল কাপূরের হাতে বিমানসংস্থার তরফে তুলে দেওয়া হয় একটা ‘এয়ারবাস এ-৩৮০’র মিনিয়েচার মডেল। কিন্তু এমন প্রচার নিয়ে ভয়ও রয়েছে। বিমান বা বিমানসংস্থা নিয়ে বেশি প্রচার হলে শেষে যদি উল্টো ফল হয়। হয়তো আইফার গ্ল্যামারের পৃথিবীতে বিমান দুর্ঘটনাগুলো নিয়ে কেউ বিশেষ মুখ খুলছেন না। অন্তত প্রকাশ্যে।
বেশির ভাগ তারকাই অবশ্য হোটেলের লবিতে চেনা সাংবাদিককে দেখে একান্তে বলছেন,‘সত্যি না, কী অদ্ভুত? এখনও খুঁজে পাওয়া গেল না প্লেনটা। ’
এমন কথায় কেউ বলে উঠেন, ‘ওই প্রসঙ্গটা তুলবেন না। এখানে দু’দিন একটু মজা করতে এসেছে। মজা করেই যেতে চাই।
প্লেন বিপর্যয়ের দুঃসহ স্মৃতি মালয়েশিয়াবাসীর কী বলিউডি নাচ-গানা দিয়ে ভোলানো যাবে। এমন প্রশ্নে কেউ কেউ তুলেছেন। সে প্রশ্নের উত্তর হয়তো মিলবে না। তবে আইফা অ্যাওয়ার্ডকে কেন্দ্র করে সেখানে উৎসাহ-উদ্দীপনার তিলার্ধ ঘাটতি ছিল না। ৫-৭ জুন তিন দিনব্যাপী সে আয়োজনে মুখরিত ছিল উপস্থিত দর্শকসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরা।
অনুষ্ঠানটি ঘিরে মালয়েশিয়া শহর জুড়ে যেন তারকা চাঁদের হাট বসেছিল। হৃতিক, প্রিয়ঙ্কা, ফারহান, অনুষ্কা, সোনাক্ষী, বিপাশাসহ অসংখ্য জনপ্রিয় তারকাদের আনাগোনায় অন্যরকম এক আনন্দের বার্তাই যেন ঘুরেছে মালয়েশিয়ার আকাশে-বাতাসে। যা স্বল্প সময়ের জন্য হলেও মালয়েশিয়াবাসীর দুঃখ ভুলিয়ে দিয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৫
টিআই/টিআই