ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

বাংলাদেশিদের নিয়ে পরিকল্পনা

মালয়েশিয়ায় নতুন কেলেংকারির জন্ম দিচ্ছে হামিদি

মাজেদুল নয়ন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৫
মালয়েশিয়ায় নতুন কেলেংকারির জন্ম দিচ্ছে হামিদি মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি ও সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো

ঢাকা: মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো বলেছেন, আমাদের আর কোন আর্থিক কেলেংকারির দরকার নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি একটি রূপালী থালা সাজাচ্ছেন দুর্নীতির।



বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদির ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান রিয়েল টাইম নেটওয়ার্কিং এসডিএন বিএইচডি’র তৎপরতার বিষয়ে বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়াকিনিতে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন চার্লস।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত শ্রম বাজারের একটি সমীক্ষা করা, আগামী বছরে কত শ্রমিক লাগবে আমাদের।

মালয়েশিয়ার ক্লাংয়ের এই সংসদ সদস্য বলেন পরিপূর্ণ সমীক্ষার মাধ্যমে বের করা দরকার, কি পরিমাণ দক্ষ লোকের প্রয়োজন, কি পরিমাণ নিয়োগ রয়েছে, কি পরিমাণ কর্ম খালি রয়েছে। শিল্প বিবেচনায় কি পরিমাণ লোকের প্রয়োজন হবে আগামী বছরে। এখন পর্যন্ত এসব কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একজন ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা এরই মধ্যে বাংলাদেশে গিয়েছেন, আগামী ৩ বছরে ১৫ লাখ শ্রমিক আনার প্রস্তুতি হিসেবে। এরং এটা বিস্ময়কর নয় যে, এর সঙ্গে জাহিদের ছোট ভাইও সেখানে রয়েছে।

আব্দুল হাকিম হামিদির ফার্ম ঢাকা এবং পুত্রজায়ার মধ্যে কথা বলছেন একটি অনলাইন ব্যবস্থা চালু করার জন্যে। যেখানে শ্রমিকরা ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করবেন। বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়া ব্যবস্থাটি যৌথভাবে মনিটর করবে।
 
আরেকটি অর্থনৈতিক কেলেংকারির হিসেব

যদি হাকিমের ফার্ম চুক্তির মাধ্যমে কাজটি পেয়ে যায়, তবে ১৫ লাখ বাংলাদেশির কাছ থেকে ৩ হাজার রিঙ্গিত করে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত নেবে।

চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, দেখা যাচ্ছে, জাহিদ তার গুরু প্রধানমন্ত্রী নাজিব আব্দুল রাজ্জাককেই অনুসরণ করছেন। তিনি মালয়েশিয়ায় আরো অতিরিক্ত শ্রমিক আনতে চাচ্ছেন কারণ তিনি অনুমান করেছেন মালয়েশিয়ানরা এ ধরনের কাজ করতে চায় না।

উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভাইয়ের ব্যবসার সঙ্গে তার নিজের কোন সর্ম্পক নেই। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো বার্তায় হাকিমের জন্যে সুপারিশ করা হয়েছে! এসবই বলা হচ্ছে, কারণ এগুলো অর্থনৈতিক কেলেংকারির ইংগিত দিচ্ছে।

জাহিদ বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক আনার আগে এ দেশে থেকে অনিবন্ধিত সব শ্রমিককে ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু তিনি বলেননি, সেটা কিভাবে করা হবে। অথচ তার বলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পুতুল নাচের আয়োজন
 
ক্রমাগত মিথ্যার মধ্য দিয়ে উপ-প্রধানমন্ত্রী মালয়েশিয়ার জনগণের সামনে একটি পুতুল নাচের আয়োজন করেছে। যেখানে বলা হচ্ছে, মালয়েশিয়া সরকার দেশের বেকারত্ব নিয়ে চিন্তিত।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেছেন, মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধিদল চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্যে এসেছেন। তবে বিষয়টি এখন জিটুজি (গর্ভমেন্ট টু গর্ভমেন্ট) থেকে সরে বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) প্রক্রিয়ায় হবে। এটা কি কেউ ব্যাখ্যা করতে পারবে, কেন জাহিদের ভাই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।

এই ১৫ লাখ শ্রমিকের কাজ কি হবে এবং কর্মসংস্থানের বিষয়টিও জাহিদকে ব্যাখ্যা করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনার এ প্রক্রিয়াকে তিনি বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি আত্মীয়করণ ও দুর্নীতির একটি চর্চাকে প্রতিফলিত করছে। মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনকে জাহিদ এবং তার এই পরিকল্পনার ব্যাপারে তাড়িত করেন তিনি।

রিয়েল টাইমের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার এ বিষয়টি মালয়েশিয়াতে আরেকটি অর্থনৈতিক কেলেংকারির দিকে নিয়ে যাবে এবং সারা বিশ্বে আবারো সমালোচিত হবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৫
এমএন/আরআই

** মালয় শিক্ষা ব্যবসায়ী জেস লি যাবেন কোথায়?
** রিঙ্গিতে ধস, বাড়ছে হুন্ডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ