ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

কুয়ালালামপুরের গাবতলী-সায়েদাবাদ!

মফিজুল সাদিক ও কায়সার হামিদ হান্নান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৫
কুয়ালালামপুরের গাবতলী-সায়েদাবাদ! ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুয়ালালামপুর (মালয়েশিয়া) থেকে: কুয়ালালামপুরের ব্যস্ততম বাস টার্মিনাল পুডু। এখান থেকে বিলাসবহুল এসি বাসে চড়ে সহজেই মালয়েশিয়ার যে কোনো প্রান্তে যাওয়া যায়।

তবে, এশিয়ার ইউরোপীয় দেশ খ্যাত মালয়েশিয়ার এ টার্মিনালটিতে গেলে যাত্রীদের উদ্ভট পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এখানে গেলেই যাত্রীদের হাত ধরে টানাটানি করে নিজের বাসে নিয়ে যেতে চান কন্ট্রাক্টররা। যেন ঢাকার গাবতলী-সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল।

হাতে ওয়াকিটকি ও ছোট একটি ব্যাগ নিয়ে পুডু টার্মিনালের চারপাশে ঘুরে বেড়ান কন্ট্রাক্টররা। একজন যাত্রীকে দেখলেই ছুটে আসেন তারা। টিকিট নিতে যাত্রীকে নানাভাবে জোরাজোরি, বাস কোথায় যাবে, কখন যাবে এবং যাত্রীর কয়টা টিকিট লাগবে ইত্যাদি কথায় কান ঝালাপালা করে ছাড়েন এ কন্ট্রাক্টররা। এদের মধ্যে আছেন নারী কন্ট্রাক্টরও।

এভাবে পুডুকে যারা ‘গাবতলী-সায়েদাবাদ’ বানিয়ে ফেলেছেন, তারা অবশ্য কমিশনের জন্যই এমন ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।

শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পুডুতে বাংলানিউজের কথা হয় মালয় কন্ট্রাক্টর সুব্রিয়াম সুরাইয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, পুডু সেন্ট্রাল বাস টার্মিনালের বেতনভূক্ত কর্মচারী তিনি। কিন্তু যাত্রী সংগ্রহ করলে এখান থেকে কিছু কমিশন পাওয়া যায়। যে কারণে যাত্রীদের কদর করে টিকিট সংগ্রহ করানোর কাজ করেন তিনি।

মালয়েশিয়ায় সবগুলোই বাসই এসি ও বিলাসবহুল। ‘গো কেএল’ ফ্রি বাসেও রয়েছে এসি ও ওয়াইফাই। যদিও এসব বাসের সংখ্যা একেবারেই হাতে গোনা।
 
পুডু সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাল ছয়তলা বিশিষ্ট। দূর থেকে দেখে মনে হবে অত্যাধুনিক কোনো মার্কেট। বাস টার্মিনালটি সব সময় ঝকঝকে থাকে, সঙ্গে এসির প্রশান্তি। অনেক সময় পুডু থেকে যাত্রীদের জন্য বাস ছেড়ে যেতেও দেরি করে। এতে সে কারণে যাত্রীরা ইচ্ছে করলেই প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে নিতে পারেন টার্মিনাল থেকেই। বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের জন্য এখানে রয়েছে পর্যাপ্ত বসার স্থান, বিশেষত তৃতীয় তলায়।
 
এ টার্মিনালে টিকিট সংগ্রহ করার পর ওই টিকিটের পেছনে কাউন্টার নাম্বার লেখা থাকে। টার্মিনাল থেকে চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নেমেই বাসে চড়তে হয়। গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রায় ২০টি বাসের সারি আছে। টিকিটের পেছনে লেখা থাকে যাত্রীর বাসটি কোন সারি থেকে ছেড়ে যাবে তা-ও।

এতো আভিজাত্য আর সুবিধার পরও পুডু টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া বিলাসবহুল এসি বাসগুলোতে সব সময় যাত্রী খরা দেখা যায়। শুক্রবার পেনাংগামী ৫০ সিটের বড় একটি বাসে মাত্র ২০ জন যাত্রী দেখা যায়। একই অবস্থা দেখা যায় ক্যামেরন হাইল্যান্ডগামী একটি এসি বাসেও। ওই ৫০ সিটের এসি বাসে যাত্রী দেখা যায় মাত্র ১২ জন।
 
পুডু থেকে পেনাংয়ের দূরত্ব প্রায় সাড়ে চারশ’ কিলোমিটার। কিন্তু যাত্রার মাধ্যম এসি ও বিলাসবহুল বাস হওয়ার কারণে পাহাড়ের কোল ঘেষে আঁকাবাঁকা মসৃণ পথে গেলেও যাত্রীদের কোনো ক্লান্তি আসে না।
 
মালয়েশিয়ার বন্ধুর ভূমিতে নান্দনিক যে সড়ক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে, বাসে চড়ে তা পাড়ি দেওয়া দারুণ আনন্দদায়ক লাগবে যাত্রীদের কাছে। পুডু থেকে মালয়েশিয়ার সব প্রদেশের পাশাপাশি সিঙ্গাপুরেও যাওয়া যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৫
এমআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ