সাংহাই থেকে ফিরে: সিঙ্গাপুর, টোকিও, সিউল, জাকার্তা ভ্রমণের পর সাংহাইকে অন্য দু’চারটা আধুনিক শহরের মতোই আশা করেছিলাম। কিন্তু সাংহাই তা ভুল প্রমাণ করল।
বেইজিং থেকে বুলেট ট্রেন। ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে চলা ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতাটাও বেশ রোমাঞ্চকর। বেইজিং থেকে সাংহাই বুলেট ট্রেনে যেতে লাগে পাঁচ ঘণ্টা।
সাংহাই রেল স্টেশনটা আমাদের দেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চেয়েও অনেক বড়। এখান থেকে মেট্রো রেলে করে মূল শহরে প্রবেশ করতে হয়।
সাংহাই শহরটি দুই ভাগে বিভক্ত। শহরের মাঝখানে হাংপু নদী। এর একপাশে পুদং এবং অন্যপাশে পুইশি। নদীর নিচ দিয়ে পাতাল সড়ক ও রেললাইন। এছাড়া উপর দিয়ে অপূর্ব ফেরি তো আছেই।
সাংহাইকে সবাই বলে এশিয়ার নিউইয়র্ক। এখানে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের দেখা মিলবে। ইংরেজি ভাষাভাষী লোকের সংখ্যাও চীনের অন্যান্য প্রদেশের চেয়ে বেশি।
সাংহাইয়ের দালানগুলো খুব দৃষ্টিনন্দন। ত্রিভুজাকৃতির কংক্রিটের ছাউনি দেওয়া বেশির ভাগ দালান। প্রাচীন দোকানগুলো বিভিন্ন গলির মতো ভেতরে।
চীনের অন্যান্য প্রদেশের চেয়ে সাংহাইয়ে খরচ কিছুটা বেশি। তবে সিঙ্গাপুর বা টোকিওর সঙ্গে তুলনা করলে অনেক কম।
দিনের চেয়ে রাতের সাংহাই আরও অনেক সুন্দর। হাংপু নদীর উপর দিয়ে ছোট নৌকায় ভ্রমণ আপনাকে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেবে। এছাড়া নদীর ওপাশে পুদংয়ে রয়েছে বিশাল বিশাল দালান। দেখা যাবে সাংহাই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, ওরিয়েন্টাল পার্ল টাওয়ার এবং সাংহাই টাওয়ার।
এখানকার আরেকটি বিখ্যাত বিষয় হলো স্ট্রিট ফুড বা ফুটপাতের খাবার। বিভিন্ন ধরনের শত শত স্ট্রিট ফুড দোকানের দেখা মিলবে এখানে। যেমন দেখতে, খেতেও তেমন সুস্বাদু।
সাংহাইয়ে সাধারণ গাড়ি বলতে ভক্সওয়াগন। মার্সিডিজ, ফেরারি, পরসে, বেন্তলি, এস্তনমার্টিন, ফোর্ড গাড়ির ছড়াছড়ি সবখানে।
বড় বড় ব্রান্ডের ফ্র্যাঞ্চাইজ দোকানগুলো গড়ে উঠেছে এ শহরে। এখানকার শপিং ডিসট্রিক্ট নাঞ্জিং রোডের লুই ভিটন, রালফ লরেন, গুচি। এছাড়া এশিয়ার সব চেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজ দোকান চোখে পড়বে।
ইউরোপ ও এশিয়ার মিলন কেন্দ্র বলা হয় সাংহাইকে। আধুনিকতা, ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং পরিমার্জিত সংস্কৃতির এক অপূর্ব সংমিশ্রন চীনের এ শহর।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
আরএম/জেডএম