ঢাকা: এবার মালয়েশিয়া ফেরার পালা। দেশে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে ভিন দেশের কর্মস্থলে ফিরছেন প্রবাসীরা।
শুক্রবার (০২ অক্টোবর) সকালে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়াগামী প্রবাসীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা দেখা গেছে। বিমানবন্দরের বহির্গমনের দু’টি টার্মিনালেই ছিল যাত্রীদের চাপ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাউন্টার টার্মিনাল ২ এ। ভেতরে প্রবেশ করেই দেখা যায়, চেক-ইন এর জন্য ডেস্ক ‘ডি’ তেই সবচেয়ে বেশি ভিড়।
কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে বিমানের বিজি ০০৮৬ ফ্লাইটটি। ডি ডেস্কের সবগুলো বুথেই কুয়ালালামপুরের যাত্রীদের চেক ইন হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জের তরুণ মো. সালেহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈদে ২ সপ্তাহের ছুটিতে দেশে এসেছিলাম। এয়ারপোর্ট থেকে সোজা বিক্রমপুর। আর ফেরার জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার) ঢাকা এসেছি। ’
জানালেন, বিমানবন্দরে ৭ বছরের মেয়ে, স্ত্রী এবং বাবা এসেছেন বিদায় জানাতে। এই ক’দিন বেশ আনন্দে কেটেছিল তার।
‘পরিবার-পরিজন ছেড়ে যেতে খুব খারাপ লাগে। তবে যেতে তো হবেই, ভাই,’ গলা ধরে আসে সালেহর।
এদিকে বিমানবন্দরে শুক্রবার সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। বিদেশগামী সবাই ছুটছেন ইমিগ্রেশন ফর্মের সন্ধানে। কেননা সব ডেস্কে পাওয়া যাচ্ছে না ইমিগ্রেশন ফর্মটি।
কুয়ালালামপুরগামী বিমানের ফ্লাইটের যাত্রীদের চাপ এতো বেশি যে, সংস্থাটির ব্যাংককগামী ফ্লাইট ০০৮৮ এর যাত্রীদের জন্য বুথ একটি রাখা হয়েছে।
আর দেশ বুঝে বিমানবন্দরের শ্রেণীবিভাগও আলাদা। বিমানের লন্ডনগামী ফ্লাইটের যাত্রী সংখ্যা যাই হোক না কেন, তাদের জন্য তিনটি বুথ খোলা রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা যে সবচেয়ে বেশি পোশাকের মূল্য দেন, সেটা জানা কথা। আর তাই তো কুয়ালালামপুরের যাত্রীদের হয়রানিও একটু বেশি।
পাঁচজন যাত্রীকে দেখলাম ইমিগ্রেশন ডেস্ক থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কক্ষে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রামের ছেলে শফিক মালয়েশিয়ার সুবাং জায়ায় কনস্ট্রাকশনের কাজ করেন। ৮ বছর ধরে মালয়েশিয়া থাকেন তিনি। ইমিগ্রেশন পার হয়ে মন খারাপ করে বসে আছেন। বললেন, ‘স্ত্রী-সন্তানের জন্য খুব খারাপ লাগছে ভাই। বিদেশের জীবনটা কষ্টের। ’
এদিকে ইমিগ্রেশন শেষে ওয়েটিং রুমে প্রবাসী যাত্রীদের সবাই ব্যস্ত ফোন নিয়ে। কথা বলছেন ছেলে-মেয়ে কিংবা পরিবার পরিজনের সঙ্গে। আর তা চলবে প্লেন ছাড়ার আগ মুহূর্ত্য পর্যন্ত, কেবিন ক্রুদের চোখ ফাঁকি দিয়ে।
ঈদের আগে দেশে ফেরা মানুষদের চোখে যে আনন্দ ছিল, ফেরার সময় সেটা নেই। যেন বিষাদ নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৫
এমএন/এমএ