কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া থেকে: বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মারামারি করে দেশের সন্মান ক্ষুন্ন করেছেন মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে রাজনীতি করা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নামধারী সুবিধাভোগীরা। গত বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) জালান উথানে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গনে এ সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন গুরুতর আহত হন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ মারামারির ঘটনায় মালয়েশিয়ায় এখন ‘ছি: বাংলাদেশ’ বলে মন্তব্য করা হচ্ছে।
গত বুধবারের ঘটনা হলেও ভিডিওটি বাংলানিউজের হাতে আসার পরই সংবাদটি প্রকাশ করা হলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল থেকেই বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজন ছিল। মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা বাংলাদেশের বিজয়ের ইতিহাস জানতে এসে দেশ সম্পর্কে বাজে ধারণা নিয়ে জীবন বাঁচিয়ে পালান শেষ পর্যন্ত।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের বিধি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রবাসে দলের অঙ্গ-সংগঠন থাকতে পারে না। তবে প্রবাসে সুবিধালোভীরা দলের গঠনতন্ত্রকে অমান্য করেই অবৈধভাবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি করছেন। অাড়ালে থাকে আদম ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ ব্যাবসা।
বুধবার দূতাবাসের অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নামধারীরা দলের নামে ব্যানার-ফেস্টুন টানান। মালয়েশিয়ায় এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি একেবারেই নেই। যা দেখতেও খুব দৃষ্টিকটু।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ওই প্রবাসী বাংলানিউজকে বলেন, যুবদলের একটি ব্যানারে জিয়াউর রহমানকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ লেখা ছিল। সেই ব্যানারটি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। আওয়ামী লীগের সমর্থক ও নেতারা সেটি নামাতে বলেন। এ সময় বিএনপি ও যুবদল নামধারীরা হামলা করেন আওয়ামী লীগ নামধারীদের ওপর। এরপর পাল্টাপাল্টি হামলা চলে।
ঘটনার আকস্মিকতায় ভয় পেয়ে অতিথি ও কর্মকর্তারা দৌঁড়ে পালান। অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার দিয়ে একদল অন্যদলের ওপর হামলা করেন। দূতাবাসের জানালাগুলো ভাঙ্গা হয়। এমনকি দূতাবাস প্রাঙ্গনের বাইরে মূল সড়কেও ছড়িয়ে পড়েন দাঙ্গাবাজেরা। রাস্তার ওপর ফেলে কয়েকজন মিলে মারতে দেখা যায় অন্য দলের সমর্থকদের।
ভিনদেশিরা এ সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলে এ সংঘর্ষ।
মালয়েশিয়া পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং মাথা ফেটে যাওয়ায় ৫ জনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের মর্যাদা চরমভাবে ক্ষুন্ন হলো বলে জানিয়েছেন প্রবাসীরা। একটি আইটি ফার্মের বাংলাদেশি কর্মকর্তা নূর রহিম বাংলানিউজকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরদিন থেকেই বাংলাদেশের কথার প্রসঙ্গে অনেক মালয়েশিয়ানই বলছে ‘ছি: বাংলাদেশ’।
সংঘর্ষের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো জানতে বেশ কয়েকবার রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এমএন/ এএসআর