ঢাকা: মালয়েশিয়ার লিংকন কলেজ ও ইউনিভার্সিটি যখন শিক্ষার্থী নিতো তখনই রমরমা শিক্ষার্থী ব্যবসা করেছেন বলে জানিয়েছেন নিউস্টার স্টাডি অ্যান্ড ট্রাভেলস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মুস্তাফিজুর রহমান। তবে লিংকনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিপাকে পড়ার দায় তার নয় বলেই দাবি করেন তিনি।
সরকারের কোনোরকম নিয়ম নীতি না মেনে কোটার অতিরিক্ত বিদেশি শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় নেওয়ার অপরাধে ২০১৫ সালের শুরুতেই কালো তালিকাভুক্ত করা হয় লিংকন ইউনিভার্সিটিকে। এরপর থেকে লিংকনে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া এবং অন্যান্য দেশ থেকেও শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীর নামে শ্রমিক আনার কাজে ব্যাবহৃত হয় বিশ্ববিদ্যালয়টি।
মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৫ সালের আগে ৫ থেকে ৬ বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শিক্ষার্থীর নামে শ্রমিক পাঠানোর এজেন্টদের প্রথম পছন্দের তালিকায় ছিল লিংকন ইউনিভার্সিটি। ভুয়া সার্টিফিকেট, কাগজপত্র জমা দিয়েও ভর্তি করানো হতো এখানে। যদিও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানো অনেক শিক্ষার্থীই কখনোই পা রাখেনি এই কলেজের ক্যাম্পাসে।
সরজমিন দেখা যায়, কেলানা জায়া এলআরটির পাশে সেলানগড়ে পেটালিং জায়ায় মায়াং প্লাজায় একটিমাত্র ফ্লোরেই গড়ে উঠেছে এই ইউনিভার্সিটি। সেখানেই কয়েকটি লোক দেখানো ক্লাসরুম আর অফিস নিয়ে চলে জমজমাট শিক্ষার্থী ব্যবসা। শুধু শ্রমিক নয়, এজেন্টদের প্রতারণার শিকার হয়ে অনেক শিক্ষার্থীও এই নামকাওয়াস্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন।
কুয়ালালামপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে যে শিক্ষার্থী ভর্তি হন, তাকেই কর্তৃপক্ষ এজেন্ট বানিয়ে নেন। নতুন শিক্ষার্থীকেই বলা হয়, পরে শিক্ষার্থী আনতে পারলে ১০ শতাংশ কমিশন দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর কাগজপত্র যাচাই না করে, শুধু টাকার বিনিময়ে ভর্তি করায়। এ সুযোগে নিজের নাম লিখতে না পারা লোকও হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী।
লিংকন ইউনিভার্সিটির একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, শুধু যে শিক্ষার্থীর আবরণে শ্রমিক আসছে তাই নয়, অনেক মেধাবি শিক্ষার্থীকে প্রতারিত করেও এ প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসছেন দালালরা।
তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জহিরুল ইসলাম সবুজের মাধ্যমে নিউস্টার অনেক শিক্ষার্থী এখানে পাঠিয়ে সর্বনাশ করেছে। এখনো বিভিন্ন ভুয়া কলেজে নিউস্টার শিক্ষার্থী পাঠায় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
ধানমন্ডির ১ নং রোডের ১ নং ভবন আহমেদ ম্যানশনে নিউ স্টারের অফিস। মুস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এখন আর মালয়েশিয়ায় বেশি শিক্ষার্থী যাচ্ছে না। এর মধ্যে জিওমেট্রিকা কলেজে একজন শিক্ষার্থী পাঠিয়েছি।
তবে সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় কলেজটির ক্যম্পাস ঘুরে দেখা যায়, কুয়ালালামপুরের জালান সেতিওয়াংসায় প্রিমা পেনিনসুলায় অবস্থিত এই কলেজটি মূলত ভিসা ব্যবসাই করে থাকে। তবে অনেকেই এর চেয়ে অনেক বাজে কলেজের ব্যবসাও করেন জানিয়ে তাদের খোঁজ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৬
এমএন/জেডএম