ঢাকা: নিজেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠানের নাম লিংকন ইউনিভার্সিটি কলেজ।
ওই কলেজটি কুয়ালালামপুর থেকে একটু বাইরে, সেলানগরে। নাম আভিচেনা কলেজ। শাহআলমের সেকশন উতামা ২ এর ২ নং জালান অপেরা এ ইউ ২/এ তামান টিটিডিআই জায়াতে। মাত্র দুটি রুম নিয়ে এই কলেজের ব্যবসা। এখন পর্যন্ত কলেজটিতে শিক্ষক নেই। রয়েছেন শুধু কর্মকর্তা। যারা ভিসার জন্য কাগজপত্র যোগান দেন এবং শিক্ষার্থীদের থেকে স্বাক্ষর নেয়ার কাজটি করে থাকেন।
মালয়েশিয়ায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা ছাড়াও দেশের পাবনা জেলা থেকে প্রচুর শিক্ষার্থী পাচার করেছেন এই জিয়াউল করিম। আর এই বছরের শুরু থেকে আভিচেনা কলেজের জন্য বাংলাদেশ থেকে স্রোতের মতোই শিক্ষার্থী ভিসায় কিশোর বয়সীদের ঢোকাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। এ কারণে ঢাকায় তার প্রতিষ্ঠান পিএসআর গ্লোবালের পক্ষ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার সর্বনিম্ন প্যাকেজও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ঢাকায় বাংলাদেশ থেকে মানুষ নেয়ার জন্যে ১ লাখ ২০ হাজার এবং ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার দুটি প্যকেজ ঘোষণা করেছেন এই প্রফেসর। তবে কি হিসেবে এবং কোথায় নেয়া হবে তার কোন উল্লেখ নেই তার প্যাকেজে।
মালয়েশিয়ায় তার পাঠানো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসএসসি পাশ না করলেও জাল কাগজপত্র করে মালয়েশিয়ায় শিক্ষার্থী ভিসায় পাঠানোর চেষ্টা করেন জিয়াউল। আর না হলে ভিজিট ভিসায় মালয়েশিয়া এনে আর খোঁজ নেন না।
ঢাকার কুড়িলে ২২৮/ক প্রগতি সরণিতে পিএসআর গ্লোবালের অফিস। তবে জিয়াউল বেশিরভাগ সময় মালয়েশিয়াতেই অবস্থান করেন। একসময় এফটিএমএস, লিংকন, ইউসিএসআই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পাঠানোর ব্যবসা করতেন জিয়াউল।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের শুরুর দিকে আভিচেনা কলেজের সঙ্গে অংশীদারিত্ব নিয়ে পুরো দমে মানবপাচারে নেমে পড়েন তিনি। এরপর মে মাস থেকে কলেজটির জন্য এজেন্ট আহবান করেন জিয়াউল। এ ক্ষেত্রে রিটেইল ম্যানেজমেন্ট বিষয়ের জন্যে ছাত্র আহবান করেন তিনি।
ঢাকার টঙ্গীর একজন এজেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, জিয়াউল তাদের মানুষ জোগাড় করতে বলেছেন। শিক্ষার্থী না হলেও চলবে। বাকিটা তিনি ম্যানেজ করবেন বলেছেন।
কুয়ালালামপুর থেকে লিংকন কলেজের একজন শিক্ষার্থী বলেন, জিয়াউল এখন আমাদের আভিচেনা কলেজের জন্যে মানুষ ব্যবস্থা করতে বলেছেন। সেটা শিক্ষার্থী না হলেও চলবে। এমনকি কোন টাকা না নিয়েও ফাইল নিতে বলেছেন। তবে আমাদের কমিশন দেয়া হবে শিক্ষার্থীর টাকা তিনি হাতে পেলে।
নিউস্টার স্টাডি অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ২ লাখ টাকায় মালয়েশিয়ায় শিক্ষার্থী নেয়া অসম্ভব।
এদিকে মালয়েশিয়ার একজন এজেন্ট জানান, এই নতুন কলেজের নাম করে এখন পর্যন্ত অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছেন জিয়াউল।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৬
এমএন/জেডএম