গন্তব্যে আছে, ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর, অথবা আমেরিকা বা লন্ডন। একসময় ভারতের অ্যাপোলোতে চিকিৎসা নিতে লোকজন চেন্নাই যেতো, বর্তমানে কলকাতা, দিল্লি ও মুম্বাইতেও তা বিস্তৃত হয়েছে।
বিশেষত এ হাসপাতালটি ক্যান্সার ও টিউমার চিকিৎসার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় সবচেয় বেশি সুনাম কুড়িয়েছে। সব ধরনের এবং শরীরের প্রতিটি অঙ্গ বিশেষ করে ক্যান্সারের জন্য রয়েছে এদের বিশেষ চিকিৎসা। ক্যান্সারের প্রাথমিক অবস্থার চিকিৎসা থেকে শুরু করে গুরুতর অবস্থার চিকিৎসার জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা ব্যবস্থা। ক্যান্সার কোন পর্যায়ে রয়েছে তা পরীক্ষা করার জন্যও সব ধরনের আধুনিকতম যন্ত্রপাতি রয়েছে এখানে। রোবটিক সার্জারির ব্যবহার এখানকার বিশেষত্ব। এখানে রয়েছে PET সুবিধা, যা মালয়েশিয়ার মাত্র তিনটি হাসপাতালে রয়েছে। এখানকার সাইক্লোট্রন হচ্ছে এক ধরনের ডায়াগনোসিস সিস্টেম, যার মাধ্যমে পুরো মানবদেহের কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কোষ রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। ফলে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল এখান থেকে এসব পরীক্ষা করিয়ে নেয়। ক্যান্সার চিকিৎসা ও পরীক্ষার জন্য রয়েছে কেমোথেরাপি, সাইবারনাইফ, ইমিউনোথেরাপি, লিনাকসহ সব ব্যবস্থা, যা শুধু বিশ্বের বিখ্যাত হাসপাতালগুলোতেই রয়েছে। নারী ও পুরুষদের বিশেষ ক্যান্সারের জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
ক্যান্সার ছাড়াও অন্যান্য সাধারণ চিকিৎসার জন্যও রয়েছে নানা রকম সেবা। হাড়, ব্রেইন, চক্ষু, জয়েন্ট, হৃদরোগ, কিডনি, বক্ষব্যাধি চিকিৎসায়ও এরা সুনাম কুড়িয়েছে। হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগ ঘুরে দেখা গেলো রোগীদের ভীড়। যা বেশ দক্ষভাবে সামলাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হাসপাতালটির পরিপাটি সাজসজ্জা নিমিষেই রোগীর মন ভালো করে দেয়। রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বন্ধুর মতো আচরণ করে। খানাকার ব্যস্থাপনায় রয়েছে এ ধরনের দক্ষতার ছাপ। রোগীরা এখানে সব ধরনের চিকিৎসা ও সেবা ওয়ান স্টপ সল্যুশন পেয়ে থাকেন। ফলে রোগীর বা তাদের স্বজনদের কোনো সেবা নিতে বেগ পেতে হয় না।
হাসপাতালটির পেশেন্ট রিলেশন ম্যানেজার ক্ল্যারেট এবং কমিউনিকেশন ম্যানেজার প্রিয়া মেনন জানান, এ হাসপাতালে মালয়েশিয়ার সব বিখ্যাত ডাক্তাররা চিকিৎসা দেন। এখানে ওপিডি ও আইপিডি বিভাগ মিলে রয়েছে ৬০ জন ডাক্তার। রয়েছে ৪টি অপারেশন থিয়েটার ও যথেষ্ট সংখ্যক আইসিইউ ও সিসিইউ। প্যাথলজি থেকে অপারেশন থিয়েটারসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো রয়েছে কাছাকাছিই। ফলে সেবা পেতে দৌড়ঝাঁপ করতে হয় না। ৬০ বেডের হাসপাতালটিতে ওপিডি (বহিঃবিভাগ) বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্যও রয়েছে কমপ্লিমেন্টারি খাবারের ব্যবস্থা। এর মধ্যে ১৫টি বেড শুধু ক্যান্সার রোগীদের জন্য।
আন্তরিক পরিবেশে চিকিৎসক ও ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা হাসপাতালটিকে দিয়েছে অনন্য মাত্রা। হাসপাতালটির চিকিৎসা খরচ মালয়েশিয়ার অন্যান্য হাসপাতালের চেয়ে তুলনামূলক কম। বিদেশি নাগরিকদের জন্য আছে দোভাষীর সুবিধা। কুয়ালালামপুরের প্রাণকেন্দ্রেই এর অবস্থান। তাই যাতায়াত নিয়েও চিন্তা করতে হয় না।
বাংলাদেশ থেকে যারা অনেক টাকা-পয়সা খরচ করে চিকিৎসা করাতে বিদেশে যান তাদের জন্য মালয়েশিয়াও হতে পারে সিঙ্গাপুর-থাইল্যান্ডের বিকল্প। আর আমাদের জন্য বিদেশে কম খরচে চিকিৎসা করাতে ‘বিকন ইন্টারন্যাশনাল স্পেশালিস্ট সেন্টার’ হতে পারে একটি নির্ভরযোগ্য গন্তব্য।
এরশাদুল আলম প্রিন্স, ল’ এডিটর
বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৭
আরআর