তবে গত নির্বাচনের মতো এবারো যেন বিরোধীদল 'বাংলাদেশি ইস্যু'কে পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে বেশ সচেতন নাজিবের দল।
গত ৪ বছরে নাজিবকে যে দুর্নাম সবচেয়ে বেশি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে, সেটি হচ্ছে ‘১ এমডিবি’ কেলেংকারি।
মালয়েশিয়া ভিন্ন ভিন্ন জাতি-বর্ণের দেশ। তাই নির্বাচনেও জাতিগত ইস্যুর প্রভাব রয়েছে। মালয় সংখ্যাধিক্যের দেশটিতে তাই ১৯৫৯ সাল থেকে প্রতি বছরই বারিসাহ ন্যাশনাল জয় পেয়ে আসছে। অন্যদিকে চায়নিজ বা ভারতীয় নাগরিকরা হাতে গোনা এ দলের ভক্ত।
বাংলাদেশিদের বিষয়টিকে নতুন করে নির্বাচনের ইস্যুতে নিয়ে এসেছে সরকারি দল। সঙ্গে অনলাইনের প্রচারণাকে ঠেকানো হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। তবে আগামী বছরের এপ্রিলের নির্বাচনের আগে সরকারি দলের নিজেদের এই ইস্যুকে বারবার সামনে আনাকে উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করছেন বিরোধীদল এবং সুশীল সমাজ।
এরই মধ্যে সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আহমেদ জাহিদ হামিদি বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইনে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত তার দল।
তিনি সাইবারস্পেসকে রণক্ষেত্র বলে উল্লেখ করে বলেছেন, বিরোধীদল তাদের সাইবার ট্রুপকে তাইওয়ান থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এনেছে। তারা বারিসাহ ন্যাশনালের বিরুদ্ধে ব্লগে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটস অ্যাপে নোংরা প্রচারণা ছড়াতে প্রস্তুত। সাবাহতে আমনো'র সোস্যাল মিডিয়ার প্রচারণা উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন সম্প্রতি।
তিনি বলেন, এবারো হয়তো গতবারের মতো বাজে প্রচারণা চলতে পারে। ২০১৩ সালের নির্বাচেনর আগে বিরোধীদল অনলাইনে প্রচারণা চালিয়ে বলেছিলো, ১০০টি বোয়িং ৭৪৭ এ করে ৪০ হাজার বাংলাদেশিকে নিয়ে এসেছে ভোট দেয়ার জন্যে। এই ধরনের প্রচারণা চালালে তার শেষ মুহূর্তের জবাব দিতেও প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমাদের ভোটারদের ৮২ শতাংশ অনলাইন ব্যবহারকারী। আবার আমাদের ৯২ শতাংশ তরুণরা অনলাইন ব্যবহারকারী। যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯ এর মধ্যে। এদের কাছে পৌঁছাতে হলে সাইবার স্পেস কার্যকর হতে হবে।
২০১৫ সালেই প্রথম বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। তবে এতেও ক্ষুব্ধ হয়েছে বিরোধীদল এবং মালয় ভিন্ন অন্য জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা। সোস্যাল মিডিয়ায় মালয়েশিয়াকে 'বাংলেশিয়া' বলেও ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন অনেকে।
বিরোধী দল এবং সুশীল সমাজ থেকে প্রশ্ন তোলা হয় শুধুই কেন বাংলাদেশি শ্রমিক! তবে সরকার এবং নিয়োগকর্তাদের পক্ষ থেকেও বারবার বাংলাদেশি শ্রমিকদের সততা এবং কর্মদক্ষতার কথা বলা হয়েছে। এমনকি সরকার এখন বিরোধীদলকেই বাংলাদেশিপ্রেমী হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে। দুই পক্ষই দুই পক্ষের ওপর বাংলাদেশিদের ছুড়ে মারছেন।
তাই ২০১৮ সালের ১৪তম সাধারণ নির্বাচনেও যে বাংলাদেশি সংখ্যা একটা বড় দাবার গুটি হবে সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
এদিকে রাজনীতিতে হঠাৎ করে মাহাথির মোহাম্মদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুবিধা সরকারি দল বা বিরোধীদল-- কে পায় সেটাও অস্পষ্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
এমএন/এসএইচ