খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উল্লাপাড়া আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম আগামী সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থী হতে চান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমাম ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন।
উল্লাপাড়ায় বিএনপির জন্য বড় ‘ফ্যাক্টর’ জামায়াত
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাপুটে অবস্থানের কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ তানভীর ইমামকে সমর্থন করলেও সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের কাছে তানভীর ইমামের তেমন কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
এ ক্ষেত্রে সাবেক সংসদ সদস্য ও উল্লাপাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শফি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। এলাকায় গণমানুষের নেতা হিসেবে তার খুব সুনাম রয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরদের ভোটে এইচটি ইমামকে পরাজিত করে ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান তৃণমূলের এই জনপ্রিয় নেতা।
সেবার জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থী মওলানা রফিকুল ইসলাম খানকে ৬৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এমপি হন শফিকুল ইসলাম শফি। বিএনপির প্রার্থী এম আকবর আলীর চেয়ে ভোট বেশি পান প্রায় ১ লাখ চল্লিশ হাজার।
আওয়ামী লীগের আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে আরো রয়েছেন- উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মারুফ বিন হাবিব, উল্লাপাড়া আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিনা মির্জা মুক্তি এবং উল্লাপাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদুল হক।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, শেষ পযর্ন্ত বাবার পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে তানভীর ইমাম-ই উল্লাপাড়া আসনের মনোনয়ন ছিনিয়ে আনবেন। আর গণ মানুষের নেতা হিসেব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি মূল্যায়ন করেন, তাহলে মনোনয়ন পাবেন শফিকুল ইসলাম শফি।
উল্লাপাড়া আসনে বিএনপিরও এক ঝাঁক সম্ভব্য প্রার্থী রয়েছেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম আকবর আলী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে ভালোই এগিয়ে রয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে তিনিই এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী।
সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল আলম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য আব্দুল ওয়াহাব, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র এম বেলাল হোসেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিমকী ইমাম খান, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উপদেষ্টা ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কাজী কামাল, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজাদ হোসেন আজাদ, উল্লাপাড়া বিএনপির উপদেষ্টা কে. এম শরফুউদ্দিন মঞ্জু এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন।
তবে উল্লাপাড়া আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির ভোটের হিসাব জটিল করে দেবে জামায়াত। এ আসনে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ঢাকা মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মওলানা রফিকুল ইসলাম খান আওয়ামী লীগ বা বিএনপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রার্থী।
জামায়াত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উল্লাপাড়া আসনে নির্বাচন করার জন্য তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর প্রার্থী হিসেবে ২০০৮ সালে সর্বশেষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বিরুদ্ধে ভোটযু্দ্ধে অবতীর্ণ হয়ে দ্বিতীয় হওয়া রফিকুল ইসলাম খান এবারও প্রার্থী হবেন।
সুতরাং একটা বিষয় নিশ্চিত যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের ত্রিমুখী লড়াই হবে। আর প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে যথাক্রমে তানভীর ইমাম, এম আকবর আলী ও রফিকুল ইসলাম খানকে।
তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলে গণমানুষের নেতা শফিকুল ইসলাম শফি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ত্রিমুখী না হয়ে, লড়াইটা চতুর্মুখীও হতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
এজেড/জেডএম